বর্ষায় ত্বকের যত্ন-
আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। প্রকৃতিতে ভারি বর্ষন, বর্ষা মৌসুমের আগমনী বার্তা দিচ্ছে। এসময় বৃষ্টিপাতের সাথে প্রচুর পরিমাণে আর্দ্রতা বয়ে যায়। গরম, আর্দ্রতা ও ভ্যাপসা আবহাওয়ায় এই সময়ে নানা ধরনের ছত্রাকের প্রকোপ বেড়ে যায়। তাই আপনার ত্বকের যত্নের রুটিনে কী করণীয় এবং কী বর্জনীয়, তা জেনে নিতে হবে। এরমধ্যে ভালোভাবে পরিচ্ছন্ন হওয়া থেকে শুরু করে হালকা মেকওভার বেছে নেওয়া পর্যন্ত কিছু বিষয় রয়েছে। তাই এই সময় ত্বকের যত্নের সঠিক পণ্যগুলো বেছে নেয়া জরুরি। কারণ ত্বক হল এমন একটা জিনিস যা যত্নের অভাবে খুব সহজেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এক্সফোলিয়েট করুনঃ
এক্সফোলিয়েশন দিয়ে তৈলাক্ততা এবং ময়লা দূরে রাখুন। এটি সব ময়লা দূর করতে সাহায্য করে এবং আপনাকে পরিষ্কার ও কোমল ত্বক দেয়। ত্বকের মৃত কোষগুলো থেকে মুক্তি পেতে এবং উজ্জ্বল ত্বকের যত্ন এর জন্য প্রতিদিন এক্সফোলিয়েট করা অপরিহার্য।
ত্বক পরিষ্কার রাখুনঃ
বর্ষাকালে সংক্রমণ জাতীয় সমস্যা বা অ্যালার্জি থেকে বাঁচতে ত্বক পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি। বার বার পানি দিয়ে মুখ ধুলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। তাই পানি ছাড়াও গোলাপজল, লেবুর রস, অ্যালোভেরা জেল দিয়ে মুখের ত্বক পরিষ্কার রাখুন। অনাকাঙ্ক্ষিত সংক্রমণ ঠেকাতে অ্যান্টিফাঙ্গালপাউডার ব্যবহার করুন।
টোনার ব্যবহার করুনঃ
ত্বক ভালো রাখার জন্য টোনারের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতিদিন ত্বকের যত্নের রুটিনে টোনিং রাখাটা জরুরি। ত্বকের ছিদ্রগুলো পরিষ্কার করে ব্রণের সমস্যা কমায় টোনিং। গোলাপজল সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক টোনার। এ ছাড়া লেবুর রস, শশার রস, গ্রিন টিও ভালো টোনার হিসেবে কাজ করে।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুনঃ
শুধু শীতকালেই নয় ত্বকের যত্নে বর্ষাকালেও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। ময়েশ্চারাইজার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং ত্বককে কোমল ও মসৃণ রাখতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। বিশেষ করে রাতের বেলা ময়েশ্চারাইজার অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।
সানস্ক্রিন ব্যবহার করুনঃ
বর্ষাকালে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের মতোই, সানস্ক্রিনও ব্যবহার করা উচিত। গ্রীষ্মের মতো বর্ষাকালে সূর্যের তাপ সেভাবে অনুভব করা না গেলেও সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ঠিকই ত্বকের ক্ষতি করে। তাই ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে, সানস্ক্রিন ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি।
মাস্ক ব্যবহার করুনঃ
আর্দ্রতা ধরে রাখতে মাস্ক ব্যবহার করাউচিত। আর্দ্রতার কারণে হওয়া ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণ করতে সপ্তাহে একবার মূলতানি মাটিরমাস্ক ব্যবহার করুন যা প্রাকৃতিকভাবে তেল শোষণ করে। মৃতকোষ দূর করতে ও লোমকূপের ময়লাদূর করতে টি ট্রি বা গ্রিন টি সমৃদ্ধ মাস্ক ব্যবহার করুন।
মেকআপ পরিষ্কার রাখুনঃ
বর্ষাকালে বেশি মেকআপ করলে ত্বকের ছিদ্রগুলি বন্ধ হয়ে যায়। ত্বকে ঠিক মতো বাতাস চলাচল করতে পারে না। ফলে ব্রণর মতো একাধিক সমস্যা বাড়তে পারে। তাই বর্ষাকালে অত্যাধিক মেকআপ এড়িয়ে চলুন। আবার মেকাপ করলেও তা সঠিক উপায়ে তুলে ফেলাটাও জরুরি।
বেশি সবুজ শাকসবজি খানঃ
শুধু বাইরে থেকে নয়, ভেতর থেকেও ত্বকের যত্ন নেওয়া জরুরি। অস্বাস্থ্যকর, তৈলাক্ত খাবার ত্বকের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে।ফলে বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা দেখা দেয়। তাই এই সব সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পাতে বেশি করে সবুজ শাকসবজি রাখুন। সবুজ শাকসবজিতে থাকে ভিটামিন ও প্রচুর পরিমাণে খনিজ যা ত্বককে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তুলতে সাহায্য করে।
ফল-মূল খানঃ
খাদ্যতালিকায় শুধু সবুজ শাকসবজি নয়, বেশি করে ফলও রাখুন। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল ত্বকের জন্য খুবই উপকারি। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে উজ্জ্বল করে তুলতেও সহায়তা করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিনসি খেতে পারেন। এটা সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে।
বেশি করে পানি পান করুনঃ
সুস্থ থাকতে ও মনের মতো ত্বক আর চুল পেতে চাইলে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন। পানি শরীর থেকে বিষাক্ত টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
বেশি বেশি পানি পান করুনঃ
ত্বক ভালো রাখতে প্রচুর পানি খাওয়া প্রয়োজন। বর্ষাকালে যেহেতু ত্বক এমনিতেই রুক্ষ হয়ে যায় তাই বেশি পরিমাণে পানি খাওয়ার ফলে ত্বকের শুষ্ক ভাব কমে ত্বক আর্দ্র থাকবে।
বাড়তি যত্নঃ
সংবেদনশীল অংশের প্রতি বাড়তি যত্ন নিন। ঠোঁট, চোখের চারপাশের চামড়া মুখের অন্যান্য অংশের তুলনায় পাতলা। তাই এর বাড়তি যত্নের প্রয়োজন। চোখের পানির ঝাপটা ও ঠোঁটে লিপ বাম ব্যবহার করুন। যদি নিয়মিত কাজল ব্যবহার করেন তাহলেঅপথ্যামোলোলজিকেল স্বীকৃত, পানি নিরোধোক, প্যারাবেন বিহীন, খনিজ তেল বা প্যারাফিন সমৃদ্ধকাজল ব্যবহার করুন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই সব মেকআপ তুলে মুখে তুলার বলেরসাহায্যে গোলাপ জল লাগিয়ে ঘুমাতে যান।
পোশাক বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ