গরমে ফ্যাশনে ভিন্নতা থাকা দরকার। এই গরমে চেহারার ওপরও ছাপ পড়ে। গরমে ঘেমে উঠলে কোনো পোশাকই আর দেখতে ভালো লাগে না। আর তারপরও ফ্যাশন তো আর ছেড়ে দেওয়া যায় না! স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করার পাশাপাশি থাকা দরকার ফ্যাশনেবল। তাই গরমে ফ্যাশনে ভিন্নতা ধরে রাখতে কয়েকটি সহজ উপায় দেখে নিতে পারেন।।
ফ্যাশনে ভিন্নতাঃ
রোদ এড়াতে থ্রি কোয়ার্টার বা ফুল হাতা বানানো যায়। সে ক্ষেত্রে জামার রঙের সঙ্গে মিলিয়ে মসলিনের কাপড় ব্যবহার করুন। ডিজাইনটাও একটু অন্যরকম হবে। একরঙা পোশাক পরতে না চাইলে সুতি চেক কাপড়ের কামিজ বানানো যেতে পারে। তবে চেক কাপড়ে কামিজের চেয়ে ফতুয়াই বেশি ভালো লাগবে। এছাড়া বাটিক, চিকেন বা টাইডাইয়ের পোশাকও গরমে আরামদায়ক।
মেয়েদের সাজসজ্জাঃ-
গরমে মেয়েদের সাজসজ্জার ক্ষেত্রে কানে মুক্তার ছোট দুল এবং গলায় সরু চেইনের সঙ্গে মুক্তার লকেট পরতে পারেন। তাছাড়া পাথরের টপ বা ছোট ঝুমকা পরতে পারেন। বড় দুল একদম এড়িয়ে চলুন। হাতে হালকা একটা ব্রেসলেট থাকতে পারে। পায়ে আংটি বা পায়েল থাকতে পারে। চুল উঁচু করে পনিটেলও করতে পারেন বা পাঞ্চ ক্লিপ দিয়েও আটকে রাখতে পারেন চুলটা।
চুলের ফ্যাশনঃ
চুলের বাঁধন এখন না হয় বাঁধাই থাক। টপস, টিউনিকের সঙ্গে পনিটেইল কিংবা খেঁজুর বেণি করতে পারেন।
মেকআপঃ
গরমে পোশাকের মতো মেকআপও হওয়া চাই হালকা। কারণ গরমে ঘর থেকে বের হলেই রোদের মধ্যে পড়তে হয়। আর বেশি গরমে মেকআপ ঠিক থাকে না। হালকা মেকআপ গরমে আরাম এবং স্নিগ্ধতা দেয়। এ ক্ষেত্রে বেইজ মেকআপে শুধু ফেসপাউডার ব্যবহার করলেই যথেষ্ট। সঙ্গে শুধু কাজল আর ম্যাট লিপস্টিক। এ সময়ে ঠোঁটে রং দেওয়ার ক্ষেত্রে হালকা রঙের কথা ভাবুন। বিশেষ করে ন্যাচারাল কালার ব্যবহার করলেই ভালো।
গহনাঃ
হালকা মেকআপের পাশাপাশি হালকা গহনা পরা ভালো। টিউনিক, টপস, কুর্তি পরলে শুধু কানে বড় দুল ও হাতে মোটা ব্রেসলেট পরুন। ছিমছাম লাগবে। ক্যাজুয়াল শার্টের সঙ্গে পরতে পারেন লম্বা মালা। গহনা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ছিমছাম কাঠ, কাপড়, মুক্তোর গয়না কে রাখা যায় নিত্য দিনের ব্যবহারের জন্য।
ত্বকের যত্নঃ
বাইরে বের হওয়ার অন্তত ১৫ মিনিট আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। সারা দিন বাইরে ঘোরাঘুরি করলে কিছুক্ষণ পর পর ভেজা টিস্যু দিয়ে মুখটা মুছে ফেলুন। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে শুধু সাজপোশাক নয়, খাবার-দাবারের ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হবে। এ সময় শারীরিক সুস্থতা এবং ত্বকের সুস্থতা দুটির জন্যই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ফলের শরবত, ডাবের পানি, কাটা ফল খেতে হবে। তেল মসলাযুক্ত খাবারের পরিবর্তে মাছের ঝোল, সবজি, সালাদ ধরনের খাবার বেশি খেতে হবে। গরম লাগলেও করোনাকালে জরুরি প্রয়োজনে বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরুন। রোদ থেকে ত্বক রক্ষা করতে সঙ্গে ছাতা এবং সানগ্লাস রাখুন।
পারফিউমঃ
যারা পারফিউম ব্যবহার করেন তারা গরমে ভারি বা কড়া গন্ধের পারফিউম মাখবেন না। এটা আপনার গরমের অস্বস্তিকে আরও বাড়াবে। ভালো হয় হালকা গন্ধের পারফিউম ব্যবহার। হালকা মিস্টি স্মেল এর সুগন্ধি কে রাখা যায় ঘামের গন্ধ এড়াতে। গরমে প্রচুর পানি পান করা উচিত। একটা ছোট তোয়ালে বা রুমাল সঙ্গে রাখুন। পানির বোতল রাখতে পারেন সঙ্গে।
জুতাঃ
পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে এ সময়ে খোলামেলা বা আরামদায়ক জুতা পরতে পারেন।
সানগ্লাসে ফ্যাশনঃ
ছেলে-মেয়ে সবার জন্যই সানগ্লাস চোখের সুরক্ষার কাজ করে এবং গরমের ফ্যাশনে যোগ করবে নতুন মাত্রা। বিভিন্ন রঙের সানগ্লাস বাজারে রয়েছে, তবে ভালো মানের সানগ্লাস ব্যবহার করা চোখের জন্য ভালো। এ ছাড়া ক্যাটস আই স্টাইলের সানগ্লাসের ট্রেন্ড বেশ চলছে। চেহারার সঙ্গে যায় এমন সানগ্লাস কিনতে পারেন। হালে ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে, কিংবা ধূলাবালি থেকে চোখ নিরাপদ তো থাকবেই সঙ্গে বাড়তি পাওয়া হবে সামার ফ্যাশন লুকস। চোখের আরামের জন্য এ সময় সানগ্লাস ব্যবহার অনেকটা স্বস্তিদায়ক। যতটা পারা যায় সূর্যের আলো এড়িয়ে চুলন। পারলে ছাতা ব্যবহার করুন।
টুপিঃ
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ছেলেদের গরমের স্টাইলের জন্য ব্যবহার করতে পারেন ক্যাপ বা টুপি। পোশাক যত সাদাসিধেই থাকুক না কেন, ক্যাপ রোদ থেকে বাঁচাবে এবং পরিবর্তন করে দিতে পারে পুরো লুকই।
স্কার্ফঃ
স্কার্ফ ও ব্যবহার করা যেতে পারে রোদ থেকে ত্বক, চুল কে কে রক্ষার জন্য। রোদে নিজেকে আড়াল করতে চাইলে মেয়েদের জন্য স্কার্ফ ফ্যাশনে নতুনত্ব যোগ করবে। এটি মুখমণ্ডলকে রোদ থেকে রক্ষা করবে এবং স্টাইলিশ করে তুলবে।
হালকা রঙের পোশাকঃ
গরমে হালকা রঙের পোশাক নির্বাচন করা উচিত। কারণ হালকা রঙের কাপড় রোদের তাপ কম শোষণ করে তাই বাইরের তাপমাত্রা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এসময় গাঢ় রঙের কাপড় নির্বাচন না করাই উত্তম। যতটুকু সম্ভব গাঢ় রং যেমন কালো,খয়েরি এইসব রঙের কাপড় এড়িয়ে চলা উত্তম। যেকোনো পোশাকের ক্ষেত্রে গরমের সময় সাদা, গোলাপি, আকাশি, নীল, বেগুনি , সবুজ রঙের পোশাক পরিধান করা উচিত।তাছাড়া হালকা রঙের কাপড় পরিধান করলে যেমন আরামবোধ হয় ঠিক তেমনি চোখেও এনে দেয় প্রশান্তি।
ঢিলেঢালা পোশাকঃ
গরমে ঢিলেঢালা পোশাক নির্বাচন করুন। সালোয়ার কামিজ ,কুর্তি কিংবা ফতুয়া যাই পরিধান করুন না কেন টাইট ফিটিং পরিধান না করাই উত্তম। একটু ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করলে আরামদায়ক লাগবে এবং শরীরে বাতাস চলাচল করতে সাহায্য করবে। কিন্তু ফিটিং কাপড় পরিধান করলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আপনি ঘামতে শুরু করবেন এবং ঘাম সহজে শুকাতেও চায়না তাই শরীর আঠালো হয়ে থাকে। যার কারণে আপনাকে পড়তে হবে অস্বস্তিকর অবস্থায়। তাই যে ধরণের পোশাকই পড়ুন না কেন চেষ্টা করবেন যাতে পোশাকটি আরামদায়ক এবং ঢিলেঢালা হয়।
গরমে ফ্যাশনে ভিন্নতা দরকার তাই গরমে রঙের চেয়ে বেশি প্রাধান্য দিন পোশাকের কাপড়ে। ছেলে-মেয়েদের যেহেতু দিনের বেশির ভাগ সময়ই বাইরে থাকতে হয়, তাই আরামদায়ক ফেব্রিক্সের কথা মাথায় রাখুন। সেক্ষেত্রে সুতিই হতে পারে বেস্ট অপশন।
পোশাক বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ