শাড়ির সাথে সাজগোজ-
অনেকেই শাড়ির সাথে কিভাবে মেকাপ করবেন তা নিয়ে ভোগেন কনফিউশনে! আজকের লেখায় তারই সহজ সমাধান। নারী এবং শাড়ি— একদম মানিকজোড় সম্পর্ক। এই কম্বিনেশন কিন্তু জিন্স, ক্রপ টপ, ড্রেস বা কুর্তা সব কিছুর থেকেই অনেক বেশি ভালো তা নিশ্চয়ই সকলেই একবাক্যে স্বীকার করবেন। আর সেই জন্যই যে কোনো অনুষ্ঠানে কিন্তু মেয়েরা শাড়ি পরতেই বেশি পছন্দ করে থাকেন। আজ থাকছে শাড়ির সাথে মানানসই সাজের কিছু টিপস যা আপনার শাড়ি লুক করে তুলবে বোল্ড অ্যান্ড বিউটিফুল। তাই আপনিও যদি শাড়ি পরে হতে চান অনন্যা তাহলে আপনাকে ফলো করতেই হবে আজকের টিপস।
ম্যাচিং স্টাফঃ
আজকাল বাজারে নানা ধরনের শাড়ির সম্ভার এবং সাথে থাকে ব্লাউজ পিসও। তবে ওই ব্লাউজ পিস দিয়েই যে আপনাকে শাড়ি পরতে হবে তার কিন্তু কোনই মানে নেই। আজকাল কিন্তু ট্রেন্ড চলছে মিসম্যাচ। যেমন ধরুন শাড়ি বেশ জমকালো তাহলে কিন্তু ব্লাউজ হওয়া চাই প্লেইন। কিন্তু যদি শাড়ি হালকা রঙের বা এক রঙা হয় তাহলে কিন্তু আপনি ব্লাউজ বাছুন বেশ জমকালো। এক্ষেত্রে ডিজাইনার ব্লাউজ বা ফ্লোরাল প্রিন্টেড ব্লাউজ কিন্তু বেশ মানাবে। কালার কম্বিনেশন কিন্তু আপনি নিজের ইচ্ছে মত পছন্দ করতেই পারেন।যেমন লাল রঙের শাড়ির ব্লাউজ কিন্তু শুধু সোনালী নয়,নীল বা সবুজও হতেই পারে। সুতরাং ম্যাচিং স্টাফ কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ।
মেকআপ বেসিক গাইডঃ
শাড়ি মানেই যে একেবারে মেকআপ বাক্স নিয়ে বসে পড়তে হবে তা মোটেও নয়। হালকা সাজও কিন্তু শাড়ির সাথে ভালোলাগে।হালকা মেকআপ আর ছোট্ট টিপ। আর অবশ্যই চোখে বেশ করে কাজল। টিপ অবশ্য আপনি বড়ও পরতে পারেন। রাতের শাড়ির সাথে একটু বোল্ড মেকআপ বেশি ভালো লাগে। তাই চাইলে হেভি মেকআপও করে নিতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে চোখ ও ঠোঁটকে সাজান ডার্ক মেকআপে।
দাগ থাকলে সমাধানঃ
মুখে যদি দাগ থাকে তাহলে কনসিলার ব্যবহার করুন। কিন্তু যদি তেমন কোন দাগ, বা চোখের তলায় কালি না থাকে তাহলে কনসিলার এর ব্যবহার না করলেও চলে। লাগিয়ে নিন মেকআপ প্রাইমার। কেন প্রাইমার? কারণ বিয়েবাড়িতে অনেকটা সময় মেকআপকে ঠিকমতো মুখে সেট রাখতে হবে। আর প্রাইমার সেই কাজটাই করে। আপনার মেকআপ অনেকক্ষণ পর্যন্ত নষ্ট হবে না। আর এটা ফাউন্ডেশনকে সঠিক ভাবে মুখের সব জায়গায় ব্লেন্ড হতেও সাহায্য করে।
গালের সাজঃ
এরপর লাগান ফাউন্ডেশন। মুখের সমস্ত দিকে সুন্দর করে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিন। তারপর চটপট দুই মিনিটে কমপ্যাক্ট পাউডারটা বুলিয়ে নিন। তবে এটা না লাগালেও চলে, যেহেতু ব্লাশন লাগাবেন।
জমকালো হোক চোখের সাজঃ
আই মেকআপ শুরুর আগে, চট করে এক মিনিটে আইব্রো পেনসিল দিয়ে আইব্রোতে বুলিয়ে নিন। এরপর মোটা করে ওপরের পাতায় উইঞ্জড স্টাইলে পরে নি্ত। বা এমনি মোটা করে পরে নিন।ব্যাস তাতেই চোখ সুন্দর লাগবে। আর নীচের পাতায় কাজল না পরলেও হবে। কিন্তু যদি একটুখানি সময় বেঁচে থাকে তাহলে নীচের পাতায় হাল্কা করে কাজলটা বুলিয়ে নিন। এবার আইশ্যাডো লাগিয়ে নিন পোশাকের সাথে ম্যাচ করে। সময় কম থাকলে একটা ব্রোঞ্জ আইশ্যাডো কিনে রাখুন। জাস্ট ওটা দিয়েই হাইলাইট করে নিন। ব্রোঞ্জের ওপর বিভিন্ন শেড পেয়ে যাবেন। ব্যাস চোখ রেডি। আর এক মিনিট এক্সট্রা থাকলে, মাস্কারা বুলিয়ে নিতে পারেন একবার। কিন্তু সময় খুব কম থাকলে না লাগালেও চলবে। আইশ্যাডোর এই রঙটাই সবার নজর কাড়বে।
ঠোট হোক প্রধান আকর্ষণঃ
হাতের কাছে রাখুন লিপবাম। লিপস্টিকের আগে হালকা করে লিপবাম লাগিয়ে নিন। না হলে ঠোঁট ফেটে চৌচির হয়ে যাবে। এবার লিপলাইনার দিয়ে চটপট আউটলাইনটা এঁকে নিন। তারপর লিপস্টিক দিয়ে ভরিয়ে দিন ঠোঁট।
জুয়েলারিঃ
শাড়ির সাথে যে সব সময় সোনার গয়নাই পরতে হবে তার কিন্তু কোনো লিখিত নোটিশ নেই। তাই আজকাল যে সব জাঙ্ক জুয়েলারির আকর্ষণীয় সম্ভার রয়েছে সেগুলি ব্যবহার করুন নিজেকে সাজিয়ে তুলতে।তবে আপনার শাড়ি অনুযায়ী বেছে নিন গয়না। বেশি জমকালো শাড়ি হলে কানে জুয়েলারী পরুন, গলায় না পরলেও চলবে। আবার কখনো গলায় বেশ জমকালো একটি নেকপিস বা হার পরুন। সেক্ষেত্রে কানের দুলের কোনো প্রয়োজন পরবে না।গলা এবং কানের মত হাতের জন্যও কিছু বেছে নিন। ব্যাস এতেই কিন্তু দারুণ জমে যাবে।
হ্যান্ড ব্যাগ ও জুতাঃ
শাড়ির সাথে যদি ব্যাগ আর জুতা ম্যাচিং হয়ে যায় তাহলে তো ষোলো কলা পূর্ণ। আজকাল নানা ধরণের সুন্দর সুন্দর ব্যাগ পাওয়া যায়। চাইলে অনলাইন থেকেই খুঁজে বের করতে পারবেন। একটা মানানসই ব্যাগ এর জন্য না হয় কিছুটা সময় খরচ করলেন।
শাড়িতে নারী কিন্তু সব সময়েই সুন্দর। আর আজকের শাড়ির সাথে সাজগোজ এর টিপস আপনার শাড়ি অবতারকে করে তুলবে আরো বেশি আকর্ষণীয়। তাই সামনে কোনো অনুষ্ঠান থাকলে আজকের টিপস ফলো করে নিজেকে সাজিয়ে তুলেই দেখুন না!
পোশাক বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ