ট্রেণ্ডস

পর্দাশীল ফ্যাশনে আবায়া

আবায়া (Abaya) স্টাইল সম্পূর্ণ নতুন এবং বৈপ্লবিক উপায়ে আধুনিক যুগের জনপ্রিয় এবং পরিশীলিত প্রবণতা। পর্দানশীল হয়ে চলাফেরার দিকে নজর দেন অনেকেই। তবে যারা একটু ফ্যাশন প্রিয় তারা পর্দা এবং ফ্যাশন দুটোই পেতে চান একসাথে। ফ্যাশন একটি জনপ্রিয় শৈলী বা অনুশীলন, বিশেষ করে আফ্রিকার ফ্যাশন আঙ্কারা এবং ইন্দোনেশিয়ার বাটিকের মতো পোশাকে। ফ্যাশন হল একটি স্বাতন্ত্র্যসূচক এবং প্রায়শই ধ্রুবক প্রবণতা যে শৈলীতে একজন ব্যক্তি পোশাক পরেন। এটি আচরণে প্রচলিত শৈলী এবং টেক্সটাইল ডিজাইনারদের নতুন সৃষ্টি। আর এর জন্য বেছে নিতে পারেন বাহারি ডিজাইনের বোরকা কিংবা আবায়া। অনেকেই আছেন, যারা বোরকা চিনলেও আবায়া সম্পর্কে খুব একটা জানেন না। সবগুলো মুসলিম দেশে পর্দা বা শালীন ভাবে পরার পোশাক কে আবায়া বলে। Abaya নামটি সৌদি আরবে বেশ পরিচিত। সৌদি আরবে নারীরা পা পর্যন্ত পুরো শরীর ঢেকে রাখার জন্য যে ঢিলেঢালা পোশাক ব্যবহার করে, তাকে আবায়া বলে। এই পোশাকটিও বোরকার মতই শরীরকে আবৃত করে রাখে। সোদি আরব এবং মালয়েশিয়াতে প্রচুর চলে এই আবায়া। ফ্যাশন সচেতনদের জন্য আজ থাকলো Abaya নিয়ে কিছু কথা-

আবায়া

“আ’বায়া” (আরবি: عباءة‎‎) অথবা শুধুমাত্র আ’বা আলখাল্লা হলো একটি সাধারণ ঢোলা বোরকাজাতীয় পোশাক, যা উত্তর আফ্রিকা ও আরব উপদ্বীপেসহ মুসলিম বিশ্বের নারীসমাজের একাংশ পড়ে থাকে। ঐতিহ্যবাহী আবায়া কালো রঙের হয়ে থাকে এবং একটি বৃহৎ বর্গাকৃতির বুনন বা কাফতান মাথা বা কাঁধ থেকে ঝুলে থাকে। মাথা, হাত ও পা ব্যতীত আবায়া পুরো শরীর ঢেকে রাখে। আবায়া নেকাব সহ পড়া যায়, যেখানে চোখ ছাড়া মুখের অন্য কোন অংশ দেখা যায় না। কিছু নারী হাত ঢাকার জন্য হাতে হাতমোজাও পড়ে থাকে। ‌ভিন্ন নাম থাকা সত্ত্বেও সব ধরনের আবায়ার মূল উদ্দেশ্য একই, শরীর ঢাকা। সামনে খোলা বা সামনে লাগানো নামেও দুধরনের আবায়া প্রচলিত আছে। অঞ্চলভেদেও আবায়ার শৈলীর পরিবর্তন হয়। কিছু আবায়াতে কালো বুনের উপর সুচিকর্ম থাকে, আবার কিছু উজ্জ্বল রঙের হয় এবং তার উপর বিভিন্ন শিল্পকর্মের দেখা মেলে। ইন্দোনেশীয় ও মালয়েশীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাক কেবায়া নামটি Abaya থেকেই এসেছে।

ফ্যাশনে আবায়াঃ

আবায়া বোরকার চেয়ে এটি একটু বেশি স্টাইলিশ বলে মনে হয়। এর উপরের লেয়ারটাও বেশ চমৎকার ডিজাইনের। এটির দুই পাশে লেজ থাকে। দেখতে বেশ সুন্দর ও পরতে আরাম দায়ক। পোশাকটির আদল নারীর রুচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বদলে যাচ্ছে আগে আবায়াকে একধরনের ঢিলেঢালা পোশাক বোঝানো হতো। ইসলাম প্রতিষ্ঠার সময় থেকে ধারণা করা হয়, এটি ধর্মীয় পোশাক হিসেবে গণ্য। তখন সৌদি আরবসহ অন্যান্য মুসলমান-অধ্যুষিত দেশে নারীদের আবায়া না পরে ঘরের বাইরে যেতে দেখা যেত না বললেই চলে। তবে আবায়া এখন আর শুধু ধর্মীয় পোশাকে সীমাবদ্ধ নেই, বরং এটি বর্তমানে ফ্যাশনের লক্ষণীয় একটি উপকরণ। মূলত পর্দা প্রথার কারণেই আবায়ার উদ্ভব। সেকালে এর ধরন সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল। বর্তমানে এর প্যাটার্নে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। শুধু শালীনতা রক্ষাই নয়, ফ্যাশনের অংশ হিসেবেও আবায়া ব্যবহৃত হচ্ছে। তাতে পরিবর্তনও ঘটে চলেছে। আবায়া এখন লং থেকে রূপান্তরিত হয়েছে শর্ট এবং থ্রি-কোয়ার্টারে। আজকাল নারীরা ফ্যাশনেবল আবায়া পরে সমকালীনতা ফুটিয়ে তুলছেন নিজেদের লুকে। কয়েক বছর ধরে, নকশা ও ধরনে আবায়া ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়ে আসছে। মধ্যপ্রাচ্যে এর রূপান্তর ও ব্যবহারের বিভিন্নতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। ডলশে অ্যান্ড গ্যাবানা এবং ক্যারোলিনা হেরেরার মতো লাক্সারি ব্র্যান্ডও আবায়ার নতুন কালেকশন নিয়ে আসছে। আধুনিক নকশার আবায়ায় জমকালো ও হালকা রঙ দুটোই বেশ ব্যবহৃত হচ্ছে। Abaya এখন লং থেকে রূপান্তরিত হয়েছে শর্ট ও থ্রি-কোয়ার্টারে। ইদানীং, গয়নার মতো বিভিন্ন নকশা করা আবায়া বেশ জনপ্রিয়। সাধারণত, এগুলোকে বোতাম, ধাতব পাত বা পাথর, মুক্তা ইত্যাদি দিয়ে সাজানো হয়ে থাকে। অন্যদিকে, চেইন দেওয়া পকেট ও কোমরে এডজাস্টেবল ফিতার ব্যবহার ফ্যাশনের জগতে নতুন সংযোজন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুধু চুমকি ও সুতার ব্যবহারের মাধ্যমে আবায়াকে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়।

বলা যায়, এ যুগে আবায়ার ব্যবহার শুধু আব্রু রক্ষাতেই সীমাবদ্ধ নয়, তা তুন ট্রেন্ড ও ফ্যাশনের জগৎকে স্পর্শ করেছে। একই সঙ্গে এটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে স্বীকৃত। তাই অন্যান্য পোশাকের মতো এটিও ফ্যাশন ও ট্রেন্ডকে প্রাধান্য দিয়ে নারীর পোশাকরুচির মতোই হয়ে উঠেছে পরিবর্তনশীল। বিভিন্ন অনলাইল পেইজে ফ্যাশনেবল আবায়া পাওয়া যায়। আজকাল অনলাইন অর্ডার বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আমাদের labene.com ফ্যাশনেবল আবায়ার কালেকশান রয়েছে।

পোশাক বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *