বিনুনি-

চুল সাজানোর চলতি ধারায় আবার এসেছে বিনুনি এর জনপ্রিয়তা। মেয়েদের মাথার চুলে বেণির স্টাইল বহু বছরের পুরোনো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাতে সংযোজন যেমন হয়েছে, বিয়োজনও ঘটেছে। বেণির বাঁধনে একালের তরুণীরাও মাথা সাজান। আজকাল চুলের বেণীর স্টাইলগুলোই খুব মানাচ্ছে নতুন নতুন ফ্যাশন গুলোর সাথে; কেননা হাল আমলের ডিজাইন করা পোশাক-পরিচ্ছদের সাথে চুলের বেণীর সাজসজ্জাটাই এ যুগের ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এই সময়ে এসে শুধু শাড়িই নয়,কুর্তি, কামিজ, টপ—এমনকি টি-শার্টের সঙ্গেও বেণি বাঁধেন অনেকেই। ইদানীং অনেক তারকার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে বেণি বাঁধা চুলের ছবি দেখা যাচ্ছে। একটা সময় ঘুমাতে যাওয়ার আগে মেয়ের মাথায় তেল দিয়ে চুল টেনে বিনুনি বাঁধার কাজটা মায়েরা করতেই বেশি ভালোবাসতেন। খেজুর বেণি, কলা বেণি, ফিতা বেণি—অনেক নামের বেণিতে তখন বাঁধা পড়ত চুল। স্বাচ্ছন্দ্যে বেঁধে নেওয়া এই চুলের বাঁধন বেণি হাল ফ্যাশনেও পেয়েছে জনপ্রিয়তা। শুধু এক ঘরানার বেণি নয়, একই চুলে ফুটে উঠছে নানা নকশার বেণি। পুরো চুলে বেণি বাঁধা তো আছেই, খোলা চুলেও নানা আঙ্গিকে জনপ্রিয় হচ্ছে এই বেণির স্টাইল। দেশীয় সংস্কৃতির উৎসবগুলোতে বেণি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। শাড়ির সঙ্গে মানিয়ে যায়, এমন লম্বা বেণিতে ফুল গুঁজে সাজার দৃশ্যটা বেশ চোখে পড়ে তখন।

বেণিতে ভিন্নতা
আগ্রহটা বেশি কিশোরী বা তরুণীদের মধ্যে। এই এক বেণিকেই নানা স্টাইলে বাঁধছে। একটু অগোছালো বা হালকা করে বাঁধা বেণিগুলো এই বয়সের সঙ্গে মানানসই বেশি। পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গেও মানিয়ে যায়। অন্যদিকে নিপাট ভদ্রভাবে বাঁধা পুরোনো আমলের বেণিগুলো চলে যাবে দেশীয় পোশাকের সঙ্গে। বেণি কখনোই পুরোনো হওয়ার নয়। যুক্তরাষ্ট্রের হপি সম্প্রদায়ের বিবাহিত নারীরাই শুধু চুলে বেণি করতে পারেন। বেণির নামেও আছে ভিন্নতা। ফ্রেঞ্চ বেণি, ফিশটেইল বেণি, ডাচ বেণি, চার দড়ির বেণি, মোড়ানো বেণি, ওলটানো বেণি ইত্যাদি। একই বেণি উপস্থাপন করা হয় নানা আঙ্গিকে। মজাটা এখানেই। কানের দুই পাশে বাঁধা গতানুগতিক বেণিগুলোকে যখন এক কান থেকে আরেক কানের পেছনে রিবন দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়, নাম হয়ে যায় কান বেণি। এই গতানুগতিক বেণিটাকেই যখন গোল করে মোড়াতে থাকবেন, গোলাপের মতো হয়ে যাবে। এই বেণি দিয়েই চার কোনা ঘর করে ফেলতে পারবেন পুরো চুলজুড়ে। স্টাইলের শেষ নেই। আছে শুধু শুরু। লম্বা মুখে যখন বেণি করবেন, এক পাশে সিঁথি করে করুন। এতে লম্বাটে ভাবটা কমে যাবে। আবার গোল চেহারার জন্য চুল কিছুটা ছেড়ে ছেড়ে বেণি করা যেতে পারে। মুখের ফোলা ভাব কম লাগবে।

সোজা বেণি

এটি সাধারণ একটি বেণী। বাঙালী নারীদের কাছে বেশ গ্রহণযোগ্য। এর প্রধান সুবিধা হলো চুল ভালো থাকে। বাইরের ধুলোবালিতে চুল, ত্বকের সুরক্ষা করা বেশ ঝামেলাপূর্ণ। চুল ছেড়ে রাখলে দ্রুত নষ্ট হয়। তবে বেণি করলে এ ভয় থাকে না। সোজা বিনুনি করতে হলে প্রথমে সবগুলো চুলকে তিনটি অংশে ভাগ করতে হয়। তারপর একভাগ এনে মধ্যভাগের সাথে মিলিয়ে তারপর তৃতীয় ভাগ মধ্যভাগের সাথে মিলিয়ে চমৎকারভাবে বেণী করা যায়। এমনভাবে শেষ না হওয়া অব্দি করে যেতে হবে।

ফ্রেঞ্চ বেণি

যেকোনো উৎসব, অনুষ্ঠানে ফ্রেঞ্চ বিনুনি করলে অন্যরকম সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। এটি খুব জনপ্রিয়। বাংলায় ফ্রেঞ্চ বেণি নামে পরিচিত হলেও হিন্দিতে এটি সাগার চৌটি নামে পরিচিত। ‘ইসাক জাদে’ সিনেমায় পারিনীতি চোপড়া ফ্রেঞ্চ বেণি করে বিভিন্ন ভঙ্গিমার অভিনয় করেছেন। যেকোনো অনুষ্ঠানে গেলে আপনি যদি ফ্রেঞ্চ বেণি করে যেতে চান তাহলে ইউটিউব থেকে এর কৌশলগুলো শিখে নিতে পারেন।

ক্রাউন বা মুকুট বেণি

ক্রাউন বেণিটি বেশি সুপরিচিত নয়। এটি করার জন্য অনেক লম্বা চুল হতে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। মাঝারি চুলেও করা যাবে। দিনে কিংবা সাধারণ কোনো প্রোগ্রামে যাওয়ার জন্য ক্রাউন বেণি করার প্রস্তুতি না নেয়াই ভালো। তবে আপনার হাতে যদি যথেষ্ট সময় থাকে তাহলে এটি করতে পারেন।

ফিশটেল বেণি

ফিশটেল বেণি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এছাড়া কর্মজীবী নারীদের কাছেও গ্রহণযোগ্য। ওয়েস্টার্ন পোশাকের সাথে এই এটি খুব মানায়। আপনি চাইলে গাউনের সাথেও ফিশ টেল বেণি করতে পারেন। সব ধরনের পোশাকের সাথে এটি চমৎকার মানায়। একপাশে ফিশটেল বেণি করার প্রচলনটাই বেশি। তবে যদি স্টাইলে ভিন্নতা আনতে চান, তাহলে চুলের সামনের অংশে সামান্য ফুলিয়ে ক্লিপ দিয়ে আটকিয়ে পেছনের অংশে ফিশটেল বেণি করতে পারেন।

বেণির তিনটি ভাগকে তুলনা করা হয় শারীরিক, মানসিক ও আত্মিকতার সঙ্গে। এই তিন যখন এক হয়ে যায়, তখন চমৎকার কিছু হবে, এমনটাই তো স্বাভাবিক। তখন তা হয়ে ওঠে অনন্যসাধারণ।

পোশাক বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ

কাপড় ধোয়ার নিয়ম-

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আমাদের দেশে ধুলাবালি বেশি। তাছাড়া মানুষের শরীরও অতিরিক্ত ঘামে। তাই কাপড় ময়লা হয় বেশি। ফলে আমাদের নিয়মিত কাপড় ধুতে হয়। কাপড় ধোয়ারও রয়েছে কিছু টুকিটাকি নিয়ম। অনেক সময় দেখা যায় কাপড় পরিষ্কার করতে গিয়ে কাপড়ের সুতা কিংবা রং নষ্ট হয়ে যায়, আবার অসাবধানতার কারণে অনেক সময় কাপড় ছিঁড়ে যায়। একটু সতর্কতা অবলম্বান করলে কাপড়কে সহজেই ভাল রাখা যায় দীর্ঘদিন। কাপড় ধোয়ার ঝামেলা থেকে রেহাই পাওয়ার কোন উপায় নেই। যদি বাসায় ওয়াশিং মেশিন থেকেও থাকে এরপরও ঝামেলার শেষ নেই। কাপড়ের ফ্যাব্রিক যেমন আলাদা, প্রত্যেক ফেব্রিকে কাপড় ধোয়ার নিয়ম ও কিন্তু আলাদা। কাপড় ধোয়ার নিয়ম গুলো অনুসরণ করে খুব সহজেই আপনার কাপড় একদম নতুন রাখতে পারবেন পুরো বছর জুড়ে।

  • ডিটারজেন্ট কখনো সরাসরি কাপড়ের উপর ঢালবেন না ব্যবহার করবেন না। প্রথমে কাপড় তারপর পানি এবং এরপর ডিটারজেন্ট দিবেন। যদি ব্লিচ ব্যবহার করে থাকেন , তবে প্রথমে পানি, তারপর কাপড় এবং সবশেষে ব্লিচিং ডিটারজেন্ট দিয়ে দিবেন।
  • অতিরিক্ত ময়লা কাপড়ের সঙ্গে অন্য কাপড় একসঙ্গে ভেজাবেন না। এতে করে এক কাপড়ের দাগ অন্য কাপড়ে লেগে যেতে পারে।
  • বাইরে পরার পোশাক—শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, শাড়ি ও অন্য পোশাকগুলো পরিষ্কারে অবশ্যই কম ক্ষারযুক্ত পাউডার ব্যবহার করতে হবে। কারণ কাপড় পরিষ্কারে বেশি ক্ষারযুক্ত পাউডার ব্যবহার করলে কাপড়ের রং ও সুতার ক্ষতি হয়। বাইরে পরার পোশাক শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন। বিশেষ করে সিল্ক ও পশমি কাপড়গুলো শ্যাম্পু দিয়ে ধোয়া নিরাপদ। এতে কাপড়ের রং ভালো থাকবে। ভারী কাপড় যেমন—ডেনিমের শার্ট, প্যান্ট ইত্যাদি কাপড় উল্টো করে তারপর ধুয়ে ফেলুন। এতে ভেতরের ময়লা ভালোভাবে পরিষ্কার হবে।
  • সুতি কাপড় ধোয়ার আগে পানির মধ্যে কিছুক্ষণ লবণ মিশিয়ে রেখে দিয়ে ডিটারজেন্ট বা সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন, কাপড়ের রং নষ্ট হবে না। এ ছাড়া কাপড়ের রং ঠিক রাখতে বেকিংসোডা ব্যবহার করুন। এতে কাপড়ের উজ্জ্বলতা বাড়বে। ওয়াশিং মেশিনে বা এক বালতি পানিতে আধা কাপ বেকিংসোডা দিয়ে দিন। কাপড়ের রং ঠিক থাকবে।
  • রঙিন কাপড় ধুতে লিকুইড ডিটারজেন্ট ব্যবহার করুন। অনেক দিন নতুনের মতো রং থাকবে। শুধু সাদা নয়, রঙিন কাপড় ধোয়ার পর নীল-জলে ডুবিয়ে নিলে রং বেশ চকচকে দেখাবে।
  • সাদা কাপড় সবসময় অন্য কাপড় থেকে আলাদা ভেজাবেন। অন্য কাপড় থেকে রং না উঠলেও , ধোয়ার সময় রং উঠতে পারে এবং আপনার সাদা কাপড় নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা ৯০%
  • সাদা কাপড়ে উজ্জ্বলতা আনতে আধা কাপ ভিনেগারের সাথে দুই টেবিল চামচ বেকিং সোডা দিয়ে মেশান এবং এই মিশ্রণটি দিয়ে সাদা কাপড় ধুয়ে ফেলুন।
  • জিন্স, শার্ট, প্যান্ট ইত্যাদি ভারী কাপড়  উল্টো করে  ধুয়ে ফেলুন। এতে  করে  কাপড়ের অভ্যন্তরীণ ময়লা ভালভাবে পরিষ্কার হবে।
  • সাদা সুতির কাপড় ধোয়ার জন্য গরম পানি ব্যবহার করুন। গরম পানিতে ডিটারজেন্ট গুলে কিছুক্ষণ কাপড় ডুবিয়ে রাখুন।
  • ডেনিম জাতীয় কাপড় যেমন জিন্সের প্যান্ট, শার্ট আলাদা ধোয়াই ভালো।
  • উলের কাপড়গুলো গরম পানিতে ধোবেন না। খুব বেশিক্ষণ ডিটারজেন্ট পাউডারে ভিজিয়ে রাখবেন না, এতে উল নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
  • সাদা কাপড়ের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে আধা কাপ ভিনেগারের সাথে দুই টেবিল চামচ বেকিং সোডা দিয়ে মেশান। এই মিশ্রণটি দিয়ে কাপড় ধুয়ে ফেলুন।
  • কাপড় বেশিক্ষণ দড়িতে ঝুলিয়ে রাখলে কাপড়ের আকার নষ্ট হয়ে যায়।
  • যে কোন কাপড় ধুতে দেওয়ার আগে এর ট্যাগ চেক করে নিন। বিশেষ করে সেনসিটিভ কাপড়ের ক্ষেত্রে এটি বেশি প্রযোজ্য। ট্যাগে কাপড় ধোয়ার নিয়ম উল্লেখ থাকে।
  • কোনো কাপড়ের জিপার খোলা রেখে ওয়াশিং মেশিনে না দেওয়াই ভালো। এতে ওয়াশিং মেশিনে দাগ পড়তে পারে। এ ছাড়া অন্য কাপড়ও এতে নষ্ট হতে পারে।
  • কাপড় শুকানোর জন্য ড্রায়ার ব্যবহার করবেন না। যতটা সম্ভব বাইরে শুকাতে দিন। আর যেসব কাপড়ের রঙ রোদে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে সেগুলো রোদে না দেওয়াই ভালো।
  • ওয়াশিং মেশিনের ফিল্টার বছরে একবার অন্তত পরিষ্কার করবেন এবং ডিটারজেন্ট পাউডারে ভিজিয়ে ভালোমতো ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করে শুকিয়ে নিবেন ফিল্টার।
  • কোনো কাপড় প্রথমবার ধোয়ার সময় অবশ্যই আলাদাভাবে পরীক্ষা করে নেবেন। কারণ নতুন কাপড় থেকে রং ওঠার আশঙ্কা থাকে। এ ক্ষেত্র পুরনো কোনো কাপড়ের সঙ্গে ধুয়ে দেখতে পারেন অন্য কাপড় নষ্ট হয় কি না।
  • সাদা সুতির পোশাক ধোয়ার জন্য গরম পানি ব্যবহার করুন। গরম পানিতে ডিটারজেন্ট গুলে কিছুক্ষণ কাপড় ডুবিয়ে রাখুন।
  • রঙিন পোশাক কড়া রোদে দেবেন না। বাতাস চলাচল করে-এমন ছায়াযুক্ত স্থানে শুকাতে দিন।
  • কাপড় প্রথমবার ধোয়ার সময় অবশ্যই আলাদাভাবে পরীক্ষা করে নেবেন কাপড় থেকে রং ওঠে কিনা।
  • বেশিক্ষণ ডিটার্জেন্ট পাউডারে কাপড় ভিজিয়ে রাখবেন না। এতে সুতা নরম হয়ে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
  • কোনো কাপড়ের জিপার খোলা রেখে ওয়াশিং মেশিনে না দেওয়াই ভালো। এতে ওয়াশিং মেশিনে দাগ পড়তে পারে। এ ছাড়া অন্য কাপড়ও এতে নষ্ট হতে পারে।
  • কোনো কাপড় প্রথমবার ধোয়ার সময় অবশ্যই আলাদাভাবে পরীক্ষা করে নেবেন। কারণ নতুন কাপড় থেকে রং ওঠার আশঙ্কা থাকে। এ ক্ষেত্র পুরনো কোনো কাপড়ের সঙ্গে ধুয়ে দেখতে পারেন অন্য কাপড় নষ্ট হয় কি না।

কাপড় ধোয়ায় ভুল-

ঠাণ্ডা পানিতে কাপড় ধোবেন নাঃ
অনেকে ভাবেন গরম পানি দিয়ে কাপড় ধুলে কাপড়ের রং জ্বলে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু শুধু ঠাণ্ডা পানি সবসময় আপনার কাপড়ের জন্য ভালো নয়। এটি আপনার কাপড়ের ময়লা বা দুর্গন্ধ দূর করতে যথেষ্ট নয়। এক্ষেত্রে জেনিফার পরামর্শ দিয়েছেন কাপড় ধুতে গরম পানি ব্যবহার করার।


ইলাস্টিক কাপড়ে ব্লিচ ব্যবহার নয়ঃ
সাদা কাপড়কে ঝকঝকে করতে ব্লিচ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু যেসব কাপড়ে ইলাস্টিসিটি রয়েছে সেগুলোর জন্য এই ব্লিচ খারাপ। মোজা, টি-শার্ট বা ইলাস্টিক কাপড়ে ব্লিচের বদলে ডিটারজেন্ট বা হোয়াইটনার ব্যবহার করা উচিত।

ডিটারেজেন্ট ব্যবহারের সময় প্যাকেটের গায়ে লেখা পরিমাণ অনুসরণ করুনঃ

সাধারণত কাপড় ধোয়ার সময় আমরা নিজেদের আন্দাজমতো পরিমাণে ডিটারজেন্ট ব্যবহার করি। কিন্তু এটা উচিত নয়। নির্দিষ্ট পরিমাণের তুলনায় কম ডিটারজেন্ট ব্যবহার করলে প্রতিবার ধোয়ার পর কাপড়ের রং নিষ্প্রভ হয়ে যেতে থাকবে। নিশ্চিত হোন ডিটারজেন্টের প্যাকেট বা কন্টেইনারের গায়ে লেখা সঠিক পরিমাণ আপনি অনুসরণ করছেন।


শুধুমাত্র রংভেদে নয়, কাপড় আলাদা করুন তাপমাত্রা বুঝেঃ
কাপড় ধোয়ার সময় আমরা সাদা ও রঙিন কাপড় আলাদা করে তারপর ধুই। কিন্তু ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়ার সময় কোন কাপড় কতটুকু তপমাত্রা গ্রহণ করতে পারবে তা বুঝে কাপড় আলাদা করুন। এতে করে কাপড়ের রং ও বুনট অনেকদিন ভালো থাকবে।

কাপড় ধোয়া তো শেষ হলো, এবার সঠিক উপায়ে কাপড় শুকাতে হবে। কাপড় ধোয়ার পর খুব বেশি মোচড়াবেন না। কড়া রোদে কাপড় শুকালে রং জ্বলে যেতে পারে। বাতাস চলাচল করে—এমন ছায়াযুক্ত স্থানে শুকাতে দিন। কাপড় সব সময় উল্টো করে মেলে দেবেন। এতে কাপড়ের রং ভালো থাকবে। শুকিয়ে গেলে কাপড় ইস্ত্রি করে পরুন। এতে দেখতে যেমন ভালো লাগবে, তেমনি কাপড়ের স্থায়িত্বও বাড়বে।

পোশাক বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ

শাড়ির সঠিক যত্ন

শাড়িতেই নারী, আর এতেই প্রকাশ পায় নারীর প্রকৃত সৌন্দর্য্য। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফ্যাশনের পরিবর্তন হয়েছে। তবে এখনও নারীদের অন্যতম পছন্দের পোশাক শাড়ি। সুতি, লিনেন, হ্যান্ডলুম, সিল্ক, যেকোনো রকমের শাড়িই হোক না কেন, ঠিকমতো পরলে ভিড়ের মধ্যেও আপনি চোখ টানবেন। তাই কিশোরী থেকে মধ্যবয়স্ক, অফিসে, অনুষ্ঠানে সবার পছন্দের পোশাক শাড়ি প্রতিটি মেয়ের আলমারিতে আর কিছু থাকুক বা না থাকুক শাড়ি থাকবেই। তবে আলমারিতে রেখে দিলেই শাড়ি ভালো থাকবে এমন নয়, তাকে ভালো করে রাখতেও হবে। নয়তো সাধের শাড়ির হাল খারাপ হতে সময় লাগবে না একটুও। শাড়ি ভালো রাখতে প্রয়োজন আলাদা যত্নের। বেনারসি কিংবা জামদানি, কাতান কিংবা টিস্যু বা সিল্ক- দীর্ঘদিন ভালো রাখতে দরকার সব শাড়ির চাই সঠিক যত্ন। আপনার যত্নেই শাড়ি সুন্দর থাকবে বহুদিন।

চলুন জেনে নেই কোন শাড়ির জন্য কেমন যত্ন প্রয়োজন-

সুতি শাড়িঃ

সুতি শাড়ি পরিষ্কার ও সংরক্ষণে তেমন কোনো ঝামেলা নেই। ঘরেই সুতি শাড়ি পরিষ্কার করা যায়। ঠান্ডা কিংবা হালকা গরম জলে ডিটারজেন্ট মিশিয়ে দশ থেকে পনের মিনিট ভিজিয়ে রেখে ধুয়ে ফেললেই হয়। তবে রঙিন শাড়িতে গরম জল ব্যবহার না করাই ভালো। তাতে শাড়ির উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়। সুতি শাড়ি ধুয়ে মাড় বা এরারুট দিয়ে ইস্ত্রি করে নিলে ভালো থাকে। তবে অনেকদিনের জন্য তুলে রাখতে চাইলে মাড় না দেয়াই ভালো।

কোরা, অর্গানজাস চান্দেরিঃ

এই শাড়িগুলোকে লম্বা কাঠের লাঠিতে পেঁচিয়ে রাখতে হবে। মুড়িয়ে রাখতে হবে মলমল কাপড়ে। সংরক্ষণ করতে অনেকগুলো শাড়ির নিচে সমতল স্থানে। কিছুদিন পর পর ভাঁজ খুলে নতুন করে ভাঁজ করতে হবে যাতে ভাঁজে ভাঁজে ছিড়ে না যায়। এই শাড়িগুলো কখনই দীর্ঘদিন হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখা যাবে না।

টিস্যুঃ

এই ধরনের শাড়িগুলো সবসময় বেনারসি শাড়ির কারিগরদের হাতে পরিষ্কার করানো নিরাপদ। কারণ সাধারণ ড্রাই ক্লিনিংয়ে শাড়িতে ভাঁজ পড়ে যেতে পারে। আর বেনারসি কারিগররা পরিষ্কার রবে লম্বা টেবিলের উপর রেখে।

শিফনঃ

অন্যান্য শাড়ির তুলনায় শিফন শাড়ির চাই বাড়তি যত্ন। শিফন কিংবা জর্জেটেশাড়িতে রোলার আয়রন ব্যবহার করবেন কি না তা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। কড়া রোলার আয়রন দামি শিফন শাড়ির স্বাভাবিক ভাঁজ দূর করে। তবে কমদামি শিফন শাড়িতে সচরাচর ভাঁজ থাকে না, তাই এতে ভাঁজ ভাঁজ আনার জন্য হালকা রোলার আয়রন আবশ্যক।

তাঁত টাঙ্গাইল শাড়িঃ

এধরনের শাড়ি ড্রাই ওয়াশ করালে শাড়ি বেশিদিন ভালো থাকে। বাড়িতে ধোয়ার সময় ভুলেও শাড়ি ওয়াশিং মেশিনে দেবেন না। ভালোমত শুকিয়ে আয়রণ করে তুলে রাখুন। মাঝেমধ্যে উপরের শাড়ি নিচে এবং নিচের শাড়ি উপরে উঠিয়ে উল্টেপাল্টে রাখুন।

জামদানি শাড়িঃ

কখনোই ঘরে জামদানি শাড়ি ধুয়ে নিতে যাবেন না। এই শাড়ি বিশেষ প্রক্রিয়ায় পরিষ্কার করতে হয় যা কাটা ওয়াশ নামে পরিচিত, তাই এটি লন্ড্রিতে বা তাতীদের দিয়ে ওয়াশ করানোই উত্তম। জামদানি শাড়ি ভাঁজ করে রাখবেন না। এতে ভাঁজে ভাঁজে শাড়ি কেটে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়। সবসময় হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখুন কিংবা রোলারে পেঁচিয়ে রাখুন। এতে শাড়িতে ভাঁজ পরবে না। তাই আপনার পছন্দের জামদানি শাড়ির সঠিক যত্ন নিন।

কাতান বেনারসি শাড়িঃ

এই শাড়িগুলো ক্যালেন্ডার ওয়াশ পদ্ধতিতে পরিষ্কার করা হয়। এই শাড়িগুলোও জামদানিমতন ভাঁজ করে রাখা যাবে না। হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। নিতান্তই না পারলে হালকা ভাঁজে রাখতে পারেন। তবে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখলে বা হালকা ভাঁজে রাখলেও শাড়িতে ভাঁজের দাগ পরে যায়। তাই কিছুদিন পরপর শাড়ি বের করে রোদে দিয়ে ভাঁজ পালটে রাখুন।

মণিপুরী শাড়িঃ

মণিপুরী শাড়ি দু-তিনবার ব্যবহারের পর ওয়াশ করে নেওয়া ভালো। খুব যত্ন নিয়ে হালকা ডিটারজেন্ট বা শ্যাম্পু দিয়ে ওয়াশ করবেন। কচলাবেন না। শাড়ি শুকনোর জন্য ঝুলিয়ে দেবার সময় দুটো পাশেই সমান করে ঝুলিয়ে দেবেন। নয়ত শাড়িটা বাঁকা হয়ে যেতে পারে।

এছাড়াও কিছু ছোটখাটো পদ্ধতি অনুসরণ করে শাড়ির সঠিক যত্ন করলে সারা বছর শাড়ির সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রাখা সম্ভব-

  • ডিটারজেন্টের চাইতে ড্রাই ক্লিনিং ভালো। বিকল্প হিসেবে শ্যাম্পু কিংবা শ্যাম্পু ও ডিটারজেন্টের মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন।
  • শাড়ি সরাসরি সূর্যের আলোতে শুকানো যাবে না। এতে রং নষ্ট হয়ে যাবে।
  • কড়া দাগ তুলতে ড্রাই ওয়াশের বিকল্প হিসেবে পেট্রোল ব্যবহার করতে পারেন। নেইল পলিশের দাগ তুলতে অ্যাসিটোন ব্যবহার করতে পারেন। তেলের দাগ তুলতে ধোয়ার আগে ট্যালকম পাউডার ও সামান্য ডিটারজেন্ট দাগে উপর ঘষে নিতে পারেন।
  • ভারি কারুকাজের শাড়ি ভালো রাখতে সবসময় শাড়ির উল্টা দিকটা বাইরের দিকে রেখে ভাঁজ করা উচিত।
  • শাড়িতে সরাসরি সুগন্ধি দ্রব্য ছড়ালে স্থায়ী দাগ পড়ে যেতে পারে। তাই কবজিতে সুগন্ধি মাখাই নিরাপদ।
  • শাড়ি সবসময় মৃদু থেকে মাঝারি তাপমাত্রায় আয়রন করা উচিত। বেশি তাপ হলে শাড়িতে ছাপ পড়ে যেতে পারে।
  • পোকামাকড় থেকে বাঁচাতে শাড়ির আশপাশে ন্যাপথালিন বল না রেখে নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন।
  • পরিপাটি ভাঁজ শাড়ীকে অনেকদিন নতুন রাখে।
  • কোন একটা ভাল শাড়ী ছাড়ার পরপরই ভাঁজ করে তুলে রাখবেন না। একটু রোদে শুকিয়ে বা ফ্যানের তলায় শুকিয়ে ইস্ত্রি করে আলমারিতে তুলে রাখবেন।
  • আপনার যত দামী শাড়ী আছে যেমন সিল্ক, রেশম , পাট, মুগা, বেনারসী, পশমিনা, টিস্যু, জামদানী ইত্যাদিকে লম্বা ভাঁজ করে একটা পরিষ্কার মলমলের কাপড় দিয়ে জড়িয়ে রাখো একটা তাকে পেতে রাখো।
  • আলমারি গুছিয়ে রাখার পদ্ধতি ঠিক থাকলে শাড়ী অনেকদিন ভালো থাকে। ঠাসাঠাসি করে শাড়ী রাখা একদমই ঠিক না। আলমারির মধ্যে হাওয়া খেলার একটু জায়গা তো রাখতে হবে।
  • শাড়ি ধাতব হ্যাঙ্গারে রাখা উচিত নয়, মরিচার দাগ লেগে যেতে পারে। যদি হ্যাঙ্গার ব্যবহার না করেন তবে একটার উপর আরেকটা রাখতে পারেন এক ভাঁজে। বেশি ভাঁজ দিলে কাপড় কিংবা কারুকাজের সেলাই একটার সঙ্গে আরেকটা লেগে যেতে পারে। ফলে শাড়ি নষ্ট হওয়ার ভয় থাকে।
  • আলমারির হ্যাঙার শক্তপোক্ত কিনবেন যাতে রডটা শাড়ীর ভারে কেতরে না পড়ে। বাজে হ্যাঙারে শাড়ী বেশীদিন সুস্থ অবস্থায় থাকে না। কাঠের বা শক্ত প্লাস্টিকের হ্যাঙার ভালো। খসখসে হ্যাঙারে কখনও শাড়ী ঝুলিও না। দুটোর বেশী শাড়ী একটা হ্যাঙারে রেখো না। ইস্ত্রি খারাপ হয়ে যায়।
  • ভাল শাড়ী পানি দিয়ে ধোবেন না। দোকানে স্টিম প্রেস করাবেন। আলমারিতে ইস্ত্রি না করে কোন শাড়ী রাখবেন না। শাড়ীর সাথে জার্মস ওখানে ঢুকে গেলে ধীরে ধীরে শাড়ী নষ্ট হওয়া শুরু হবে। 
  • শাড়ী কোন কারণে ছিঁড়লে তৎক্ষণাৎ রিফু করিয়ে নিন। যত দেরি করবেন তত নষ্ট হবে শাড়ীটা। 
  • মাসে একবার অন্তত আলমারি থেকে সব শাড়ী বের করে আবার গোছাবেন। বিশেষ করে মলমলে জড়ানো শাড়ীগুলো। মাঝেমাঝে ভাঁজ খুলে খুলে দেখবেন। ভাঁজ বদল করবে নয়তো অনেক সময় শাড়ী ভাঁজে ভাঁজে ফেঁসে যায়।
  • শাড়ী অর্গেনাইজারে শাড়ী রাখতে পারবেন তবে খেয়াল রাখবেন সেটা যেন সুতীর কাপড়ের হয়। প্লাস্টিকের শাড়ী বা ব্লাউজ অর্গেনাইজার তেমন সুবিধের হয় না। কেমন যেন ভেতরটা গরমকালে ভেঁপসে ওঠে।  
  • নিমপাতা, কালোজিরে আর কারিপাতার আলাদা আলাদা ছোট ছোট কাপড়ের পুটলি বানিয়ে আলমারির বিভিন্ন খোপে রেখে দিন। তাহলে পোকামাকড় থেকে শাড়ীগুলো রক্ষা পাবে। নেফথালিন , অডোনিল রাখতে পারেন। অনেকে এসেন্সিয়াল অয়েল আলমারিতে রাখে। আলমারি খুললে একটা ফ্রেশ গন্ধ বেরোয় আর শাড়ীগুলোরও ফ্রেশ থাকে।
  • বছরে একবার অন্তত সব শাড়ীকে সারা দিন রোদে দিন। ডাইরেক্ট রোদ নয় যদিও। ব্যালকনি থাকলে শাড়ীগুলোকে দড়িতে ঝুলিয়ে দিন। নীচে কোন কাপড় পেতে শাড়ীগুলোকে ছড়িয়ে রাখুন। ছাদ থাকলে আরো ভাল। ছাদে পাটি অথবা মাদুর পেতে বা এক দুটো বেডকাভার পেতে শাড়ী গুলোকে রেখে দিন। কড়া রোদের সময় একটা হালকা কাপড় দিয়ে শাড়ীগুলোকে ঢেকে রাখুন। সন্ধ্যের আগে গরমাগরম সবকটা শাড়ী আবার আলমারিতে তুলে রাখুন। সেদিন ভাঁজ বদলালে আরো ভালো হয়।      
  • শাড়িতে আলপিন কিংবা সেফটিপিন ব্যবহার না করাই শ্রেয়, বিশেষ করে শিফন শাড়িতে। তারপরও ব্যবহার করতেই হয়। তাই চেষ্টা করতে হবে পিনগুলো যাতে বেশি আঁটসাঁট অবস্থায় না থাকে। ভারী এব্রোয়ডারি কিংবা ভাড়ী পাড়ের শিফন শাড়ি হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখা উচিত নয়। কারণ একসময় ওই ভারী কাজের ভারেই শাড়ি ছিঁড়ে যেতে পারে।
  • আজকাল দোকানে ময়েশ্চার অ্যাবজরবেন্টের ছোট্ট ছোট্ট প্যাকেট কিনতে পাওয়া যায়। বর্ষাকালে শাড়ীর আলমারিতে অবশ্যই রাখবেন।
  • সুতি শাড়ি ধোয়ার পর অ্যারারুট দিয়ে নিন। এরপর টানটান করে মেলে দিন। শুকিয়ে গেলে ইস্ত্রি করে আলমারিতে তুলে রাখুন।
  • জামদানি শাড়িকে কাটা ওয়াশ করতে হয়। এই শাড়ি আলমারিতে ভাঁজ করে রাখবেন না। হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখুন বা রোলারে পেঁচিয়ে রাখতে পারেন। ভাঁজ করে রাখলে জামদানি শাড়ির মাঝেমধ্যে কেটে যায়। শাড়ি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।
  • শিফনের শাড়ি কখনও ইস্ত্রি করবেন না, আলমারিতে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখবেন না। এই শাড়িতে সেফটিপিন ব্যবহার না করাই ভালো।
  • চান্দেরি বা বেনারসি জাতীয় শাড়ি ভাঁজ করে রাখুন। সবচেয়ে ভালো হয় সরু লাঠি জাতীয় কোনো কিছুতে রোল করে রাখলে অথবা সাদা ট্রেসিং পেপার দিয়ে মুড়ে রাখলে। মাঝেমধ্যে শাড়ি অবশ্যই রোদে দেবেন।
  • সিল্ক শাড়ি হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে আলমারিতে রাখুন। ড্রাই ওয়াশ করতে হবে। বাড়িতে ধোয়া যাবে না। এই শাড়ি উল্টো করে ইস্ত্রি করান। সিল্ক শাড়িতে দাগ পড়ে যায়। এক্ষেত্রে দাগের অংশে পাউডার দিয়ে রাখুন।
  • তাঁতের শাড়ি আলমারিতে রাখার আগে আয়রন করে রাখুন। অনেকদিন পরা না হলে মাঝেমধ্যে খুলে ভাঁজ উল্টেপাল্টে নিন। 
  • মসলিন কাপড়ে মুড়িয়ে রাখলে বাজে দুর্গন্ধ ও ধুলাবালি থেকে দূরে থাকবে।

উপরোক্ত টিপসগুলো অনুসরণ করে শাড়ির সঠিক যত্ন নিলে পছন্দের শাড়িটি নতুনের মতোই সুন্দর থাকবে দীর্ঘদিন।

পোশাক বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ

পূজার সাজসজ্জা

উৎসব মানেই আনন্দ, সাজসজ্জা, নতুন পোশাক পরা, ঘুরে বেড়ানো। দুর্গাপূজার আয়োজন চলতে থাকে কয়েকদিন ধরে। প্রতিদিনের উৎসবের সাজেই থাকা চাই ভিন্নতা। তাই শুরু থেকেই যদি একটি প্ল্যান করে নেওয়া যায় যে কোন দিন কী ধরনের পোশাক পরবেন বা কীভাবে সাজিয়ে তুলবেন নিজেকে তাহলে পূজার উৎসবের দিনগুলোতে সাজের ভিন্নতা রাখতে পারবেন খুব সহজেই। এবারের পূজার সময়টায় কিছুটা গরমের আমেজ থাকবে তাই পূজামণ্ডপে সারাদিন আপনার উপস্থিতির ক্ষেত্রে সুতি পোশাকটাই স্বস্তিদায়ক হবে। 

সাজগোজঃ

পূজোর সময় হালকা গরম থেকেই যায়। তাই সকালে অঞ্জলি দেবার জন্য হালকা সুতির পোশাক আরামদায়ক। আর যারা শাড়ি পড়তে চান গরদ বা তসরের শাড়ি অঞ্জলির জন্য বেশ ভালো। তার সঙ্গে যদি বেছে নেন মানানসই গোল্ড প্লেটের গয়না তাহলে দারুন মানাবে। একটা ট্র্যাডিশনাল খোঁপা তার একধারে বেলিফুলের মালা হলে দারুণ লাগবে। এছাড়াও পোশাকের সঙ্গে যদি গাঢ় চোখের মেকআপ চান করতেই পারেন। তবে সেক্ষেত্রে ঠোঁট হবে হালকা ম্যাট ফিনিশ। আর যদি লিপস্টিকের রঙ গাঢ় চান তাহলে অ্যাই মেকআপটা হালকাই ভালো লাগবে। চোখে শুধু মোটা করে কাজল ভালো লাগবে। তবে যারা গয়না পড়তে ভালোবাসেন তারা এইসময় জাঙ্ক গয়নার পরিবর্তে একটু ট্র্যাডিশনাল গয়না। বা এথনিক গয়না পড়লে বেশি ভালো লাগবে পূজোর সময়।

চুলের সাজসজ্জাঃ

চুল বাঁধায় অনুসরণ করতে পারেন নানা রকম ঢং। এখানে চুল টুইস্ট করে ঢিলেঢালা বেণি যেমন দেখা যাবে, তেমনি মাঝে সিঁথি করে টান টান করা খোঁপা বাঁধার ধারাও থাকবে। খোঁপা করা চুলের ওপর সাদা ফুল অনেকটা মুকুটের মতো করেই বসানো। আবার কপালের ওপর লাগানো কৃত্রিম চুলের চিকন বেণি নিয়ে এসেছে বোহিমিয়ান লুক। চোখ সাজানোয় যত্ন থাকুক। কারণ, এবার সেটাই নজর কাড়বে বেশি। গয়নার নীল রং একজনের চোখের সাজে নিয়ে এসেছে আধুনিকতা। আবার একই ভাবে টানা চোখে ধরা পড়েছে ঐতিহ্যের ছোঁয়া। শাড়ির সঙ্গে হাতভর্তি চুড়িতে সাজ সম্পূর্ণ।

মেকআপঃ

স্নিগ্ধ সাজেই শুরু হোক পূজার দিনগুলো। মেকআপের শুরুতে মুখ পরিষ্কার করে সানস্ক্রিন লোশন লাগাতে ভুলবেন না। কারণ দিনে সানস্ক্রিন ব্যবহার না করলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। পোশাকের সাথে মেকআপটাও মানানসই হওয়া চাই। দিনের সাজটা হালকা রাখুন। ভারী ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করাই ভালো দিনের বেলা। গরমে মেকআপ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এতে। তাই হালকা পাউডার বেজড মেকআপ ব্যবহার করুন। দিনের উৎসবে বেজ মেকআপ হতে হবে হালকা। অবশ্যই স্কিন টোনের সাথে মিল রেখে ব্লাশন। সকালের মেকআপে হাইলাইটার ব্যবহারের দরকার নেই। পূজার সাজসজ্জা তে হালকা মেকআপের এই লুকে আপনি হয়ে উঠবেন অসাধারণ।

চোখের মেকআপঃ

যেহেতু দুর্গাপূজা বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা। তাই পূজার সাজসজ্জা তে বাঙালি লুকটাই গুরুত্ব পায়। আর পূজা যেহেতু গরমের সময় তাই হালকা মেকআপই ভালো লাগবে। আইশ্যাডের ক্ষেত্রে ব্রাউন, ব্রোঞ্জ, গোল্ডেন, কপার এবং চাহিদা অনুযায়ী আইলাইনার ও ২/৩ কোট মাশকারার প্রলেপ দিন। যা এ সময়ের জন্য উপযুক্ত। মনে রাখবেন, আইব্রুর শেপ ও আইলাইনার দেওয়ার ধরন আপনার ব্যক্তিত্বকে প্রকাশ করবে।

লিপস্টিকঃ

চোখের মেকআপকে গুরুত্ব দিতে চাইলে ঠোঁটকে হালকা রাখতে হয়। আবার একটু গ্লসের ব্যবহারেই হালকা লিপস্টিক দেওয়া ঠোঁটটাই বেশি গুরুত্ব পেয়ে যায়। কিন্তু এই গরমের সময় পূজোর দিনের সাজ লিপগ্লস একদমই বেমানান। তাই বুঝে নিন কোনটি আপনার জন্য মানানসই। একপ্যাচে লাল সাদা গরদ শাড়ি, চুলের সাজে খোপা বা বেণী বা খোলা রাখা লম্বাচুল, সিঁথিতে সিঁদুর, কপালে লাল টিপ, হাতে শাখা—এ সাজে খুব সহজেই আমরা ঠোঁটে লাল লিপস্টিকই ভাবি। আবার এই ধরনের সাজের সাথে সালোয়ার-কামিজ বা ফতুয়াকে পোশাক হিসেবে ভাবা যায় না। অর্থাত্ ঠোঁটের লিপস্টিকের শেড অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

অনুষঙ্গঃ

সিঁথিতে সিঁদুর দেওয়ার ভিন্ন ভিন্ন ধরন আছে কিন্তু বিবাহিত মেয়েদের কাছে সিঁথিতে সিঁদুর কেবলমাত্র সাজের অনুষঙ্গ নয়। হাতের শাঁখা-পলাও ঠিক তেমনই গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রত্যেক বিবাহিত নারীর কাছে। প্রতিটি অনুষঙ্গের বিশেষত্বকে বুঝে ভেতরে ধারণ করে যদি তার প্রকাশ ঘটাতে পারলেই তার পূর্ণতা আসে। কানের দুল, গলার মালা, নাকের নথ, খোপার কাঁটা—সবই নির্ভর করে সাজের বিশেষত্ব, পোশাকের ধরন এবং মানুষটির পছন্দ ও ব্যক্তিত্বের ওপর।

পূজায় রাতের সাজগোজঃ

সন্ধ্যার পর পূজার জন্য একটু গাঢ় করে সাজতে পারেন। তাই রাতের মেকআপ একটু ভালো করে করে নিন।সন্ধ্যার পর পূজার জন্য একটু গাঢ় করে সাজতে পারেন। তাই রাতের মেকআপ একটু ভালো করে করে নিন।

ছবিঃ পূজায় সাজগোজ
  • প্রথমে চোখের আশপাশে এবং দাগ থাকলে সেটা ঢাকার জন্য কনসিলার ব্যবহার করে তা ঢেকে নিন। এর উপরে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে স্পঞ্জ করে বেইস মেকআপ করে নিন।
  • এর উপর ফেইস পাউডার দিন। এবার ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে আরও একবার ভালো করে ব্লেন্ড করুন।
  • সিলভার রংয়ের হাইলাইটস দিয়ে একটু গাঢ় রঙের আইশ্যাডো ব্যবহার করুন রাতের সাজে। আইলাইনার ও কাজল দিয়ে মোটা করে চোখ আকিয়ে নিন। চোখের পাপড়ি ঘন ও বড় দেখানোর জন্য ২-৩ বার মাশকারা ব্যবহার করুন।
  • চোখের মেকআপ গাঢ় হলে লিপস্টিকের রঙ হালকা দেয়ার চেষ্টা করুন।
  • পোশাক ও সাজের সঙ্গে মানানসই করে চুলের স্টাইল করে নিন। খোঁপা, লম্বা বেণী, খোলা চুলেও বেশ লাগবে। এছাড়া চুল স্ট্রেইট বা কার্ল করেও স্টাইল করতে পারেন। পূজার সময় চুলে ফুল থাকা ভালো। তাই যে স্টাইলই করুন না কেন চুলে ফুল গুঁজে নিন।
  • পোশাকের সাথে মিলিয়ে গহনার প্রতিও নজর দিন। মেটালের গহনা বেশ ভালো লাগবে রাতের বেলা।

দশমীর সাজঃ

পূজার প্রাণ হলো বিজয়া দশমী। দশমীতে সবাই সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন। দশমীতে লাল-সাদা শাড়ি পরতে পারেন। এদিন চোখে উজ্জ্বল রং ব্যবহারের মাধ্যমে স্মোকি লুকে সাজাতে পারেন। সঙ্গে মোটা করে কাজল, আইলাইনার ও মাসকারা ব্যবহার করুন। গালে ব্লাশন ও ঠোঁটে গাঢ় রঙের লিপস্টিক দিন। খোঁপা কিংবা খোলা চুলে জড়িয়ে নিন তাজা ফুল।

জুতাঃ

পূজার পোশাকের সাথে জুতা বাছাই করার সময় আরামের কথাও ভাবতে হবে। পূজা দেখার সময় অনেক হাঁটতে হয়, তাই আরামদায়ক স্যান্ডেল পরুন। পূজামণ্ডপে যাওয়ার জন্য যদি অনেকটা হাঁটার প্রয়োজন হয়, তাহলে হিল এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। রাতের দাওয়াতে যাওয়ার জন্য বেছে নিতে পারেন মানানসই হিল জুতা।

ছেলেদের সাজঃ
পূজার শুরুর দিন গুলোতে ছেলেরা হালকা রং এর পাঞ্জাবি ও পায়ে আরামদায়ক ফিতে যুক্ত স্যান্ডেল পরতে পারেন। আর শেষ দিন গুলোতে জমকালো পাঞ্জাবি, ফতুয়া পছন্দ করতে পারেন। যারা একটু অন্যভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে চান তারা ধুতি পরতে পারেন। ছেলেরা চুলে জেল ব্যবহার করে এ দিন ভিন্ন লুক আনতে পারেন। বাজারে বিভিন্ন স্টাইলের আংটি ও ব্রেসলেট পাওয়া যায়, পরতে চাইলে হাতের জন্য পছন্দমতো ও মানানসই বেছে নিতে পারেন।

উত্সবের ফ্যাশনে শুধু নতুনত্বই নয়, ঐতিহ্যের ছোঁয়া আছে বলেই উত্সবের সাজে সার্বজনীনতা খুঁজে পাওয়া যায় সহজেই। পূজার দিনগুলোতে সুন্দর থাকুন, সবাইকে শারদীয় শুভেচ্ছা। পোশাক বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুকগ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদেরপেইজ

রূপচর্চায় বাদাম তেল-

রূপচর্চায় আমরা নানা উপাদান ব্যবহার করে থাকি। যার মধ্যে বাদাম তেল একটি। ত্বককে ময়শ্চরাইজ করতে এর জুড়ি মেলা ভার। এই তেলের রয়েছে আরো অনেক গুণ। ত্বক এমনকি চুলকে ভালো রাখতেও এটি বেশ উপকারি এই তেল। উপকারিতা গুলো জেনে নিন-

ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায়
বাদাম তেল ত্বকের জন্য বেশ উপকারি। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন বলিরেখা, ব্ল্যাকহেডস, রুক্ষ ত্বক ইত্যাদি সমস্যাকে সুন্দর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও চোখের নীচের কালো দাগ খুবই খারাপ লাগে দেখতে। এক্ষেত্রে কাঠবাদাম বেশ উপকারি। কাঠবাদামের পেস্ট বানিয়ে চোখের নীচে বেশ কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখলে কালো দাগ দূর হবে। এছাড়াও অনেকের চোখের নীচ ফোলা থাকে। এই অতিরিক্ত ফোলা ভাব কমাতেও বেশ সাহায্য করে কাঠবাদামের পেস্ট।

ত্বককে উজ্জ্বল করতে
কাঠবাদামে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ই। যা ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এবং রক্তকে পরিষ্কার রাখে। তার ফলে ত্বক ধীরে ধীরে উজ্জ্বল হতে থাকে। রোজ বাদাম তেল ম্যাসাজ করলে ত্বক হয় উজ্জ্বল ও নরম। এছাড়াও ভিটামিন- ই ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির হাত থেকে বাঁচায়। ট্যান পরে যাবার হাত থেকে বাঁচায়। ও ত্বককে ড্যামেজ হয়ে যাবার হাত থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকে বয়সের ছাপও পড়তে দেয় না। রূপচর্চায় বাদাম তেল এর জুড়ি মেলা ভার।

চুলের যত্নে
কাঠবাদাম ত্বকের সাথে সাথে চুলের যত্নেও বেশ উপকারি। এতে থাকা ভিটামিন- ই, বি-২, বি-৬, এবং ভিটামিন- এ চুলকে শক্ত করে ও নরম রাখে। এছাড়াও সিল্কি বানায়। একটা বাউন্সি লুক দিতে সাহায্য করে। ও এতে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড চুলকে পুষ্টি যোগায়। তাই চুলকে সুন্দর ঘন ও লম্বা রাখতে ব্যবহার করুন বাদামতেল।

অন্যান্য সমস্যায়
হার্ট, ত্বক চুল ছাড়াও বাদাম তেল ডায়াবেটিসের সমস্যায় একটি কার্যকরী সমাধান। এটি রক্তের অতিরিক্ত সুগার লেবেলকে কম করে। ডায়াবেটিস ছাড়াও কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার হাত থেকে বাঁচায়। এই ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ওষুধ হিসাবে কাজ করে। এছাড়াও বেদনা নাশক হিসাবেও কাজ করে বাদাম তেল। ব্যাথার জায়গায় বাদাম তেল মালিশ করলে ব্যাথা হালকা কমে। এগুলি ছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণ করতে বাদাম তেল অনন্য। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় যারা ভুগছেন তারা রোজ বাদাম তেল খান উপকার পাবেন।

বককে উজ্জ্বল করতে বাদাম তেলঃ

বাদামে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ই। যা ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এবং রক্তকে পরিষ্কার রাখে। তার ফলে ত্বক ধীরে ধীরে উজ্জ্বল হতে থাকে। রোজ বাদাম তেল ম্যাসাজ করলে ত্বক হয় উজ্জ্বল ও নরম। এছাড়াও ভিটামিন- ই ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির হাত থেকে বাঁচায়। ট্যান পরে যাবার হাত থেকে বাঁচায়। ও ত্বককে ড্যামেজ হয়ে যাবার হাত থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকে বয়সের ছাপও পড়তে দেয় না।

চুলের যত্নে বাদাম তেলঃ

কাঠবাদাম ত্বকের সাথে সাথে চুলের যত্নেও বেশ উপকারি। এতে থাকা ভিটামিন- ই, বি-২, বি-৬, এবং ভিটামিন- এ চুলকে শক্ত করে ও নরম রাখে। এছাড়াও সিল্কি বানায়। একটা বাউন্সি লুক দিতে সাহায্য করে। ও এতে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড চুলকে পুষ্টি যোগায়। তাই চুলকে সুন্দর ঘন ও লম্বা রাখতে ব্যবহার করুন বাদামতেল।

চুলের বিভিন্ন সমস্যায় বাদাম তেলঃ

অকালে চুল ঝরে যাওয়া এখন একটি জাতীয় সমস্যার মত। যাতে সবাই আক্রান্ত। আসলে এটি হয় দেহে ফসফরাসের অভাব থেকে। কিন্তু কাঠবাদামে আছে প্রচুর পরিমানে ফসফরাস। তার ফলে এটি চুল ঝরে যাওয়া যেমন রোধ করে, তেমনি নতুন চুল গজাতেও বেশ সাহায্য করে। এছাড়াও যারা খুশকির সমস্যায় ভুগছেন তারা বাদাম তেল ও নিমতেল একসঙ্গে স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করে সারারাত রাখুন। পরদিন সকালে ধুয়ে ফেলুন। খুশকির সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে।

অন্যান্য সমস্যায় বাদাম তেলঃ

হার্ট, ত্বক চুল ছাড়াও বাদাম তেল ডায়াবেটিসের সমস্যায় একটি কার্যকরী সমাধান। এটি রক্তের অতিরিক্ত সুগার লেবেলকে কম করে। ডায়াবেটিস ছাড়াও কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার হাত থেকে বাঁচায়। এই ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ওষুধ হিসাবে কাজ করে। এছাড়াও বেদনা নাশক হিসাবেও কাজ করে বাদাম তেল। ব্যাথার জায়গায় বাদাম তেল মালিশ করলে ব্যাথা হালকা কমে। এগুলি ছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণ করতে বাদাম তেল অনন্য। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় যারা ভুগছেন তারা রোজ বাদাম তেল খান উপকার পাবেন

ত্বকের যত্নে বাদাম তেলঃ

  • বাদাম তেল বা আমন্ড অয়েলে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন “ই”, যা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
  • নিয়মিত ব্যবহারে এই তেল আপনাকে দিতে পারে একটি চমকপ্রদ এবং গ্লোয়িং স্কিন।
  • শুধু তাই নয়, ব্যবহারের নিয়মানুবর্তিতা, স্কিন ক্যান্সারের প্রটেকশন হিসাবেও একটি বিশাল ভূমিকা পালন করে।
  • বাদাম তেল স্কিনে খুব সহজ ভাবে মিশে যায়। ভিটামিন “এ” গুণসম্পন্ন এই তেল, ত্বকের ব্ল্যাকহেডস বা পিম্পল-এর মত সকল সমস্যাকে চিরতরে মুক্তি দেয়।
  • ডার্ক সার্কেল রিমুভ করতে বাদাম তেল, মিরাকেল-এর মতন কাজ করে।
  • স্কিন র‍্যাশ-এর সমস্যায় এর তুলনা অকল্পনীয়। ন্যাচারাল ট্রিটমেন্ট করে, স্কিনে ফেয়ারনেস আনতে, এর জুড়ি মেলা ভার।
  • এমনকি কয়েকটা বাদাম পেস্ট করে, প্রতিদিন নিয়ম করে, স্কিনে মেসেজ করলে, এটুকু বলতে পারি, একটা ডিফারেন্ট লুকের অধিকারিনী আপনিও হয়ে উঠবেন।
  • স্কিন ইরিটেশন-এর ক্ষেত্রে বাদাম তেল খুবই পাওয়ারফুল।
  • হালকা এবং ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ এই তেল স্কিনে, প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি যোগাতে সক্ষম যা স্কিন ট্যান রোধ করে।
  • এছাড়াও এটি একটি ফ্যান্টাস্টিক ন্যাচারাল মেকআপ রিমুভার।

চুলের যত্নে বাদাম তেলঃ

  • পলিউশন, ডাস্ট, কেমিক্যাল, হেয়ার কালার ইত্যাদি কারণে স্ক্যাল্পে অনেক সময় ইনফেকশন হয়।
  • প্রপার কেয়ার না নিলে, অকালে চুল দুর্বল হয়ে পড়ে। ড্যানড্রাফ এর সমস্যা দেখা দেয়।
  • একমাত্র বাদামতেল-ই পারে এই সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি দিতে।
  • এই তেলের নিয়মিত ব্যবহার, মাথার ত্বকের রক্ত চলাচল ঠিক রাখে, চুলের পুষ্টি যোগায়, নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
  • প্রচুর পরিমাণে মশ্চারাইজার থাকার দরুন, আমন্ড অয়েল (বাদাম তেল) একটি ন্যাচারাল কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে।
  • বাদাম তেল দুই রকমের হয়, একটি মিষ্টি আরেকটিতে তেতো। আর এই তেঁতো তেল-ই চুলের যত্নের কাজে লাগে।
  • ভিটামিন ই, ফ্যাটি এসিড এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ এই তেল ব্যবহারের নিয়মানুবর্তিতা, ড্রাই অথবা ফ্রিজি হেয়ার কে সফট বা কোমল করে, চুলের গোড়া মজবুত করে, চুল সিল্কি এবং শাইনি করে, গোড়া থেকে চুল ভাঙ্গা রোধ করে।

সত্যি কথা বলতে, শুধুমাত্র রূপচর্চায় বাদাম তেল এর ব্যবহার নয়, এছড়াও বাদাম তেল এমন একটি এসেনশিয়াল অয়েল যার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। তাহলে দেখলেন তো, ত্বক এবং চুলের যত্নের ক্ষেত্রে বাদাম তেল, কতটা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে!

পোশাক বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ

রুচিশীল পোশাক-

পোশাকেই মানুষ নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে চায়। এক্ষেত্রে আধুনিক মানুষ ট্রেন্ড ফলো করেন। নিজস্ব ঐতিহ্যের সঙ্গে মিল রেখে বৈচিত্র্যপূর্ণ পোশাকই তারা পছন্দ করেন। পোশাক ব্যক্তিত্ব এবং সৌন্দর্য প্রকাশের সবচেয়ে সহজ মাধ্যম। পোশাক যেমন একদিকে আপনার রুচিশীলতা প্রকাশ করে তেমনি যুগের সঙ্গে পালটে যাওয়া ফ্যাশনের মাপকাঠি আপনার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। বর্তমান যুগ, ফ্যাশনের যুগ। সৌন্দর্য সচেতনতা ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বেশি। কিন্তু এই আধুনিক যুগে ছেলেরাও কম যায় না। নগরায়ণ, কর্পোরেট পেশা, ডেস্ক জব, নানাবিধ কারণে আমরা আমাদের ফিগারটাকে ঠিক রাখতে পারি না। ফিগারের সঙ্গে কিন্তু শরীর, স্বাস্থ্য ও মন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সুন্দরের জয় সর্বত্র। তাই আপনাকেও অবশ্যই রুচিশীল হতে হবে। আপনি কালো বা শ্যামলা সেটা কিন্তু কোন সমস্যা না। আপনি পোশাক আর পোশাকের রং নির্বাচনে রুচিশীল হয়ে থাকলে আপনাকে মোটেও দৃষ্টিকটু দেখাবে না। এছাড়া পোশাকের ধরন, রং এবং বৈচিত্র্যেও ভিন্নতা আনে নিজের মাঝে। তবে ভিন্নতার আমেজের ক্ষেত্রে একই ধরনের পোশাক নির্বাচন বর্তমানে হাল ফ্যাশনে তরুণদের সাজের মাত্রায় ভিন্নতার আঁচড় কাটছে সবচেয়ে বেশি।

পোশাক পরুন রুচিশীলঃ

হালফ্যাশনের বা ট্রেন্ডি পোশাক পরা মানেই স্মার্ট হওয়া নয়। পোশাকটা আদতে মানাচ্ছে কি না, সেটাই হলো আসল কথা। পোশাক-আশাক যদি ঠিকমতো নির্বাচন না করতে পারেন তাহলে আপনার স্মার্টনেস অনেকাংশেই মার খেয়ে যাবে। তাই পোশাক পরুন নিজের ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী। হাল ফ্যাশনের পোশাক নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকলে বেছে নিন ট্র্যাডিশনাল বা সব সময়েই যেসব পোশাকের চল থাকে, সেই পোশাকগুলো। যেমন শাড়ি, সাধারণ ছাঁটের সালোয়ার-কামিজ, স্কার্ট, ফর্মাল শার্ট, প্যান্ট, স্ট্রেইট কাটের জিন্স, পোলো টিশার্ট ইত্যাদি। কী রঙের পোশাক বেছে নেবেন তা বুঝতে না পারলে পরুন হালকা যেকোনো রঙের পোশাক। হালকা রং সবাইকেই মানিয়ে যায়। নকশা এবং স্টাইলের চেয়েও বেশি গুরুত্ব ধরে রং। এটাই প্রথমে নজরে আসে। সাধারণত পুরুষদের নেভি এবং চারকোল রং বেশ মানানসই। অনেকেই স্রেফ কালো স্যুট পরেন। এটি আসলে সাধারণ মানের নির্বাচন। এতে অর্থ-প্রতিপত্তির প্রকাশ ঘটে না। নারীদের রং নির্বাচনের ক্ষেত্রটি বড়। তারাও কালো পরতে পারেন। তবে লম্বা ধাঁচের পোশাকের অধিকাংশটিই কালো হতে হবে। নারীদের ক্ষমতাসীন দেখায় টিলস এবং কোবাল্ট ব্লু রংয়ে। যদি ডার্ক রঙের পোশাক পরতে চান তবে সাজ-সজ্জাটা একটু হাল্কা করুন, সেইসঙ্গে কম গয়না পরুন। ওড়না যদি রংচঙে হয়, তবে জামাটা হাল্কা রঙের নির্বাচন করুন। এভাবে নিজের মতো করে মিলিয়ে নিয়ে পরলে যে কোন রংইে আপনাকে মানিয়ে যাবে। তবে খুব চোখে লাগে এমন কোন রং নির্বাচন না করাই ভাল।

নিতান্ত ঝোঁকের বশে কাপড় কিনলে আপনার শুধু ওয়ারড্রোবই উপচে পড়বে। চিন্তা-ভাবনা করে রুচিশীল পোশাক কিনতে হবে। ব্যক্তিত্বের সর্বোচ্চ প্রকাশ ঘটবে যে পোশাকের ভিতরে আপনি থাকবেন। মনে করুন, নিজেকে প্যাকেট করতে হবে। ভালো দেখাতে কী ধরণের প্যাকেট নির্বাচন করবেন? আপনার আকৃতি আয়তক্ষেত্র ধাঁচের হলে কোমরের অংশে কিছুটা সরু দেখায় এমন পোশাক নির্বাচন করুন। ডিম্বাকৃতি হলে মোটা শক্ত কাপড়ের পোশাক এবং চেক পরবেন না। একেবারে ছিপছিপে হলে কিছুটা স্বাস্থ্যবান দেখাবে এমন পোশাক প্রয়োজন। নারীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু মোটা দেখাবে বলে বিবেচনা করা যায়। আর পুরুষদের ক্ষেত্রে দেখাবে বলিষ্ঠ।

পোশাক বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুকগ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদেরপেইজ

পোশাকে শরতের ছোঁয়া-

প্রকৃতিতে বইছে শরতের হাওয়া। শরৎ মানেই শুভ্র, শরৎ মানেই সাদা মেঘের ভেলা, শরৎ মানেই কাশবন, শিউলি ফুলের মেলা। গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীত এই তিনের মিশ্রণ রয়েছে শরতে। শরৎকালের এই সময়টায় রং, রূপ ও বৈচিত্র্যে মৌলিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। এ কারণে শরৎ ঋতু নিয়ে রচিত হয়েছে বহু গান, কবিতা ও উপন্যাস। শরতের আবহাওয়াতেও যেন চলে লুকোচুরি খেলা। এই গরম, যে কোনো মুহূর্তেই শুরু হয় ঝমঝম বৃষ্টি। পাশাপাশি চলছে পূজা উৎসবের আয়োজন। এর প্রভাব মনে যেমন পড়ে, তেমনি পড়ে পোশাকেও। ফ্যাশন সচেতন মানুষের কাছে ঋতুভেদে পোশাকে আসে ভিন্নতা। ঋতুর এ পালাবদল মনকে যেমন দোলা দিয়ে যায়, ঠিক তেমনি ফ্যাশন ট্রেন্ডকেও আন্দোলিত করে। আর বর্তমান সময়ে ঋতুভিত্তিক পোশাকের আলাদা একটা চাহিদা রয়েছে। যে কারণে ফ্যাশন হাউসগুলো ঋতুভিত্তিক পোশাক তৈরিতে বাড়তি মনোযোগ দেয়। যে কারণে এ ধরনের পোশাকও চোখে পড়ে হরহামেশা। তবে একেক ঋতুর রং-রূপ একেক রকম। আর পোশাক তৈরিতে এ রং-রূপকেই প্রাধান্য দেয় ফ্যাশন হাউসগুলো। শুধু পোশাকেই নয়, ঘরের পর্দা, বিছানার চাদর, বালিশের কভার, কুশন কভারসহ সবকিছুতেই শরতে আমেজ আনার চেষ্টা করা হয়েছে।

শরতের রংঃ

শরতের হাওয়ায় প্রকৃতি যেন শিল্পীর তুলির আঁচড়ে আঁকা জীবন্ত এক ক্যানভাস। প্রকৃতির এই ক্যানভাসের অংশ হতে পোশাকের রংটি হওয়া চাই মানানসই। শুভ্র কাশবন আর সাদা মেঘের ভেলা আর প্রশান্ত নীল আকাশকে প্রাধান্য দিয়ে ডিজাইন করা হয় শরতের পোশাক। যে ডিজাইনে প্রাধান্য পায় সাদা ও নীল রং। শরতের আছে নিজস্ব বর্ণ আর গন্ধ। দেশীয় পোশাক নকশাকারেরা সাধারণত শরতের জন্য বেছে নেন চারটি রং—সাদা, নীল, সবুজ আর সোনালি। নীল আকাশ, সাদা কাশফুল, সোনালি সূর্য আর সবুজ ফসল। শরত এলেই দল বেঁধে কাশবনে ঘুরতে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এই সময়ে যদি থাকে পোশাকে শরতের ছোঁয়া, তাহলে কেমন হয়? তাই তো ফ্যাশন হাউসগুলো নীল-সাদার সমন্বয়ে তৈরি করে রকমফের পোশাক। শুধু শাড়ি বা কামিজে নয়, শরতের অন্যান্য পোশাকেও প্রাধান্য পায় শুভ্র সাদা আর আকাশের নীলাভ রং। গাঢ় নীল, হালকা নীল, আসমানি নীল, ময়ূরকণ্ঠী নীল, রয়েল ব্লু, নেভি ব্লু আরও কত শত রং ফুটিয়ে তুলেছে পোশাকের জমিনে। সঙ্গে সাদা কিংবা অফ হোয়াইটের মিশেল ও নকশার বৈচিত্র্য—এভাবেই অনেক ফ্যাশন হাউস সাজিয়েছে শরৎ–সংগ্রহ। এর বাইরেও পোশাকে ব্যবহার হয়েছে ফিরোজা, ছাই, সোনালি, খয়েরি, সবুজ, হলুদ, কমলা,বেগুনি, গোলাপি রঙের মিশেলে সব নান্দনিক ডিজাইন। আবার শরৎ মানেই কিন্তু শারদীয় আমেজের একটা ব্যাপার থাকে। চারপাশে চলছে শারদ উৎসবের আয়োজন। আর পূজা মানেই লালের প্রাধান্য তো থাকেই। সকালের মিঠে সোনালি রোদজুড়ে থাকে শরতের আমেজ, আবার শিউলিবোঁটার যে কমলা রং, সেটা তো শরতেরই। তাই এভাবেই নতুন নতুন শরতের রং খুঁজে বেড়াচ্ছেন ডিজাইনাররা।

কেমন হবে শরতের পোশাকঃ

শরতের উষ্ণতায় আরাম আর আভিজাত্য বজায় রেখে তরুণীদের পছন্দের তালিকায় বরাবরই শীর্ষে আছে সুতি পোশাক। সুতি পোশাক সহজে ঘাম শুষে নেয়। প্রাকৃতিক তন্তুর তৈরি বলে মসৃণও হয়। তাই এখন সুতি পোশাক পরিধানের পরামর্শ দিচ্ছেন ফ্যাশন বোদ্ধারা। তবে খুব বেশি চাকচিক্যময় পোশাক নয়, সাদামাটা সুতি পোশাক বেছে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ডিজাইনাররা। এ সময় কৃত্রিম তন্তুর পোশাক এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন কেউ কেউ। কেননা এ ধরনের কাপড়গুলো ঘাম শুষে নিতে পারে না। ফলে পোশাকটা শরীরে লেগে থাকে এবং যা অস্বস্তি তো বটেই, দৃষ্টিকটুও। গরমে পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে মেয়েরা সাদা, হালকা গোলাপি, হালকা বেগুনি, হালকা নীল, বাদামি, আকাশি, হালকা হলুদ, ধূসরসহ হালকা রঙের পোশাকগুলো বেছে নেন। ফ্যাশন ডিজাইনাররাও এ সময় হালকা রঙের পোশাক পরিধানের ওপর প্রাধান্য দেন বেশি। আসলে গরমে সাদা ও অন্যান্য হালকা রঙের পোশাক শুধু তাপ শোষণই করে না, সেই সঙ্গে চোখকে দেয় প্রশান্তি। গরমে গাঢ় রং এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। ফতুয়ার ভেরিয়েশনও চোখে পড়ার মতো। সবচেয়ে বেশি ভেরিয়েশন রয়েছে টি-শার্টে। স্ক্রিন প্রিন্ট, কিংবা স্কেচ করা বিভিন্ন ডিজাইন ক্রেতাদের সহজেই আকৃষ্ট করবে। তরুণ প্রজন্ম টি-শার্টের বেশ ভক্ত। ভাদ্র-আশ্বিন এই দুই মাস মিলিয়ে শরৎকাল। তবে আশ্বিনের তুলনায় ভাদ্রে গরমের মাত্রা একটু বেশি। তাই শরতের পোশাক প্রস্তুতের ক্ষেত্রে কাপড়ের দিকটাও খেয়াল রাখতে হয়। যে কারণে সুতি, ভয়েল, অ্যান্ডি কটনকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কোটা এবং ধুতি কাপড়ও রয়েছে এ তালিকায়।

কুর্তি-কামিজে গরমের আরামঃ

এ সময় মেয়েদের পছন্দ সুতি কাপড়ের পোশাক। সেটা সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি বা ফতুয়া যা-ই হোক না কেন। তবে পোশাকটা যদি কামিজ হয় তাহলে সঙ্গে মানানসই রং ও ডিজাইনের সালোয়ার ও ওড়না। প্রচন্ড গরমের কারণে আরামদায়ক কুর্তা ও ফতুয়ার প্রতিও ঝুঁকছে অনেক তরুণী। জিন্সের সঙ্গে মানানসই পোশাকগুলো হতে পারে বিকালের আদর্শ। এ সময় পালাজো, লং কুর্তি, কিংবা ঢিলেঢালা কাটের পোশাকও জড়িয়ে নিচ্ছে তরুণীরা। দিনের বেলা তো বটেই, রাতের আয়োজনে নিজের পোশাকে ভিন্নতা আনতে এমন পোশাক দারুণ। এ ছাড়াও শাড়ি পরতে চাইলে সুতি শাড়িও হতে পারে এই গরমের আদর্শ পোশাক।

ট্রেন্ডি কাটছাঁটে সুতি পোশাকঃ

গরমের পোশাকে এসেছে নানা বৈচিত্র্য। তরুণীরা পছন্দমতো বেছে নিচ্ছে হাতা কাটা, ছোট হাতা এমনকি ম্যাগি হাতার কুর্তি-কামিজ। উঁচু গলার কাজকে পেছনে ফেলে এখন বেশি চলছে চারকোণা, পানপাতা ও ভি-আকৃতির গলা। আর পোশাকগুলোয় করা হয়েছে বস্নক, কারচুপি, অ্যাপিস্নক, ভরাট অ্যাপিস্নক ও অ্যামব্রয়ডারির কাজ। লম্বা কাটিংয়ের কুর্তি-কামিজের পরিবর্তে এখন বেশি চলছে মাঝারি কাটিংয়ের কুর্তি-কামিজ।

শরতের শাড়িঃ

এ সময় যারা শাড়ি পরতে চান তারা বেছে নিন হালকা রঙের শাড়িগুলো। ফিকে নীল শাড়িতে জরিপাড় দেয়া, চাঁপাফুল রং, ধানি রং, সাদা জমিনে বুটি তোলা জামদানি শাড়ি এবং এর সঙ্গে ম্যাচিং বস্নাউজ। বস্নাউজের হাতা থ্রি কোয়ার্টার হলে ভালো মানাবে। যারা সালোয়ার-কামিজ পরবেন তারাও এরকম হালকা রংগুলোই বেছে নিতে পারেন। তা ছাড়া শরৎকালের নীল রং তো রয়েছেই। এ ছাড়া শরতে সিল্ক কিংবা জর্জেট পরার উপযুক্ত সময়। আরামদায়ক হবে লিনেন, ধুপিয়ান, ভয়েল, মসলিন, তাঁতের কাপড়ও। জর্জেট, জয়সিল্ক, সিল্ক কাপড়ের লং কামিজ, গাউন ধাঁচের পোশাক এই সময়ের উৎসবের জন্য ফ্যাশনেবল ও আরামদায়ক।

ঘনঘোর বর্ষা শেষে এভাবেই রবীন্দ্রনাথের গানের মতো শরৎ ছড়িয়ে দেয় অরুণ আলোর ছটা। রবিঠাকুর বলেছেন, “শরতের রংটি প্রাণের রং। অর্থাৎ তাহা কাঁচা, বড় নরম। রৌদ্রটি কাঁচা সোনা, সবুজটি কচি, নীলটি তাজা। হয়তো সেই কারণেই পোশাকে সাদার পাশাপাশি অন্যান্য রংয়ের আঁচড় পড়ে।”’কবি–সাহিত্যিকেরা নানা গল্প, কবিতা, উপন্যাসে শরতের যে সৌন্দর্য তুলে ধরেছেন, সেই শরতের প্রকৃতিকে অনুভবের সুযোগ এই শহরে কোনো দিনই ছিল না। এদিকে ছিল না বসন্ত বা পয়লা বৈশাখের মতো বৃহৎ আয়োজনে শরৎ উদ্‌যাপনের ঘনঘটাও। বেশ নিভৃতেই শরৎ আসত শহরে। রোদের মাঝেও বৃষ্টিধারায় শরতের সাদা মেঘ। প্রকৃতিতে শরতের এই আগমনী ছোঁয়া শহুরে জীবনে খুব একটা ছুঁয়ে না গেলেও জীবনযাপনে এর ছোঁয়াটা কিন্তু রয়েই যায়।

পোশাক বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ

পূজার সাজ-

পূজা মানেই আনন্দ, পূজা মানেই উৎসব। উৎসব মানেই নতুন জামা কাপড় কেনাকাটার ধুম। উৎসবের সাজে নিজেকে সাজিয়ে তোলার, সবাইকে রাঙিয়ে তোলার নানা আয়োজন। শরৎ মানেই কাশফুল, সাদা হাসি। শরৎ মানেই ঢাকের আওয়াজ।! পূজার আনন্দ বার্তা। দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার আগমন। বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসব। সময় পাল্টাবার সাথে সাথে পূজার ফ্যাশনও পাল্টেছে। পূজার সাজ হওয়া চাই একদম অন্যরকম। সারাবছর জিন্স কুর্তা। কিন্তু পূজা মানেই আধুনিকতা আর আভিজাত্যের মেলবন্ধন। তাই পূজায় শাড়ি পরার ঝোঁক বেশি।। যদিও সময়টা এখন ফিউশনের। এই সময়ে নতুন নতুন ট্রেন্ড তো চলছেই। কখনো কখনো রমণীরা সাবেকিয়ানা রূপেও সেজে উঠছে। ফ্যাশনের এই যুগে তরুণীরাও পুরনো বা সাবেকিয়ানাকে গ্রহণ করছে খুব সহজভাবেই। কপালে লাল টিপ, লাল চুড়ি, এলো খোপায় জড়ানো লাল জবা সব কিছুতেই দুর্গা পূজার দুর্গতিনাশিনীর রাজকীয়তার আবেদন প্রকাশ পায়। বাঙালি নারীর পরনে শাড়ির আবেদন চিরন্তন। গরদ, সিল্ক, জামদানি আর সুতির পোশাকের চাহিদাতো সারা বছরই থাকে। পূজাতেও তা বাদ যায় না। পূজার পোশাকের নক্সায় জমকালো ফিউশন নেই। কিন্তু পূজার বিভিন্ন জিনিস স্বস্তিকা, চক্র, বেলপাতা এছাড়াও আরও নানান পূজার অনুসঙ্গ শাড়ি বা পোশাকে থাকলেই শারদীয়ার জন্য পারফেক্ট।

কেমন হবে পূজার সাজঃ

পূজার সবচেয়ে বড় আনন্দ সকালে অঞ্জলি দেয়া আর বিভিন্ন মন্দির ঘুরে বেড়ানো। তাই পূজা দেয়ার আগে নিজের সাজের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। পূজার দিনগুলোতে প্রতিদিনই চাই ভিন্ন সাজ আর আকর্ষণীয় লুক। পোশাক পরা থেকে শুরু করে চুল, মুখের সাজ- সবকিছুতেই যেন পূজার রেশ পাওয়া যায়। ষষ্ঠী থেকে দশমী টানা পাঁচ দিন। তাই সাজার সুযোগটা বেশি। দেশি বা পাশ্চাত্য যে ধাঁচেই সাজেন না কেন- খেয়াল রাখতে হবে এতে যেন আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সপ্তমী থেকে পূজার ঘোরাঘুরির মূল আনন্দ শুরু হয়। তাই এ দিনের সাজ-সজ্জার খুঁটিনাটি বিষয়গুলো নজরে রাখা জরুরি। পুজোর দিনগুলোয় মেয়েরা কখন কেমন সাজ দেওয়া উচিত সে অনুয়ায়ী সেজে উঠতে পারে। যেমন- শুভ্র সকালে পুজো করতে বসলে সুতির শাড়ি পরতে পারেন। দুপুরে গরম থাকবে। তাই দুপুরে সুতির শাড়ি, সুতির সালোয়ার কামিজ হতে পারে বেস্ট অপশন। তা ছাড়া রাতের সাজে হাল ফ্যাশনের ট্রেন্ডি লুক বা গর্জিয়াস লুক নিতে পারেন। তবে সম্পূর্ণ সাজটাই নির্ভর করবে তারা কখন কীভাবে সেজে উঠতে চাইছে তার ওপর। ভারী গহনা, ভারী শাড়ি যেমন- বেনারসি, কাতান পরেও কিন্তু পুজোর সাজ দেওয়া যায়। আর এতে ফুটে ওঠে আভিজাত্য। যারা শাড়ি হিসেবে বেনারসি, কাতান শাড়ি বেছে নিতে চান তারা ভারী গহনা পরতে পারেন। আবার যারা সিল্ক, মসলিন শাড়ি পরবেন তারা একটু হালকা ধরনের গহনা বেছে নিতে পারেন। এখন অনেকেই বুটিকের পোশাক পছন্দ করেন। বেশ হালকা কিন্তু দারুন স্টাইল মেনটেন হয়। তাই এবার পূজায় বুটিকের শাড়ির চাহিদা বেশ ভালো। শাড়ির সঙ্গে সব ধরনের চুল বাঁধাই ভালো দেখায়। চুল খোলাও থাকতে পারে শাড়ির সঙ্গে। এতে ট্রেন্ডি লুক আসবে। ওদিকে সালোয়ার কামিজ বা অন্য কোনো পোশাকের সঙ্গে খোঁপা না করাই ভালো। এর বদলে বেণি বা খোলা চুল ভালো দেখাবে। মূল কথা, আপনার সাজটা এমন হওয়া জরুরি যাতে আপনি আরাম অনুভব করেন। পুজোর দিনগুলোয় ঐতিহ্যবাহী পোশাকের বাইরের পোশাকেও সাজে ভিন্নতা আনতে পারেন। বিশেষত, সপ্তমী বা অষ্টমীর রাতে বাড়ির পুজো প্রাঙ্গণের আড্ডায় একটু হালকা ধাঁচের পোশাক পরতে পারেন। চাইলে ওয়েস্টার্ন লুকেও সেজে উঠতে পারেন। 

সবশেষ কথা হলো, কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব নয়, সাবেকিয়ানা হোক বা আধুনিক স্টাইল স্টেটমেন্ট; সম্পূর্ণটাই নির্ভর করবে আপনি ঠিক কেমন সাজে সেজে উঠতে চান তার ওপর।

পোশাক বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুকগ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদেরপেইজ

খাদি কাপড়-

খাদি শুধুমাত্র হাতে তৈরি কাপড় নয়। এর সাথে জড়িয়ে আছে ভারত বর্ষের স্বাধিকার আন্দোলন ও বাঙালী ঐতিহ্য। একজন মানুষ খাদি নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন নিরন্তর। গ্রামীণ খদ্দর খাদি নামে রূপান্তরিত হয়েছে বহু আগে। ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সময় এ কাপড়ের জনপ্রিয়তা বেড়ে উঠে। “স্বদেশী পণ্য গ্রহণ কর আর বিদেশী পণ্য বর্জন কর” এই শ্লোগানের ওপর ভিত্তি করেই তৎকালীন সময়ে খাদিশিল্পের উৎপত্তি হয়। গান্ধীজীর প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লার অভয় আশ্রম খাদি শিল্প প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একটি পেশাজীবী সম্প্রদায় তাঁত শিল্পের সাথে তখন জড়িত ছিলেন; তাদেরকে স্থানীয় ভাষায় বলা হতো ‘যুগী’ বা ‘দেবনাথ’।

দেশে যখন খাদি কাপড়ের চাহিদা বেড়ে যায় তখন সাধারণ মানুষের কাপড়ের চাহিদা পূরণ করার জন্য মাটির নিচে গর্ত করে পায়ে চালানো প্যাডল দ্বারা এ কাপড় তৈরি হতো। খাদ থেকে তৈরি হতো বলে এর নাম হয় খাদি। আবার অনেকে বলে থাকে খদ্দর শব্দটি গুজরাট শব্দ। এই শব্দ থেকে খাদি বা খদ্দর। কার্পাস তুলা থেকে তৈরি হতো সুতা এবং সেই সুতা ব্যবহার করে চরকায় তৈরি হতো খাদি কাপড়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খাদির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যেও এসেছে পরিবর্তন। এই বুনন কেবল সুতি সুতায় নয় রেশম, অ্যান্ডি, মুগা, তসর, উল প্রভৃতিতে হতে পারে এবং হয়ও।

দিন দিন বদলে যাচ্ছে খাদির চিরায়ত চেহারা। অমসৃণ থেকে মসৃণ হচ্ছে টেক্সচার। মোটিফ, প্যাটার্ন ও রং সবকিছুতেই ঐতিহ্যের ছোঁয়া। শীত, গ্রীষ্মসব ঋতুতেই পরা যাচ্ছে খাদির শাড়ি। আটপৌরে সাজ থেকে পার্টি সবখানেই মানিয়ে যায় খাদির শাড়ি আর পোশাক। খাদি কাপড়ের বিশেষত্ব হলো ন্যাচারাল ফাইবারের কারণে গরমে ঠান্ডা আর ঠান্ডায় উষ্ণতা দেয়। শুধু সাদা অফহোয়াইট আর বাদামি রঙের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। খাদি এখন নানা রঙে রঙিন। দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেও খাদিকে টিকিয়ে রাখতে নিজেদের আগ্রহ ও পৃষ্ঠপোষকতায় খাদির পরিসর বৃদ্ধিতে কাজ করছে ফ্যাশন হাউজগুলো। শতবর্ষের খাদি পণ্য তার গুণগত মান বজায় রেখে আধুনিকতার সংমিশ্রণে প্রতিযোগিতার বাজারে চাহিদা ধরে রেখেছে। পৃথিবীর যেখানে বাঙালী কমিউনিটি আছে সেখানে খাদি কাপড়ের প্রসার ঘটেছে। বাংলাদেশের বিদেশি দূতাবাসে খাদিসহ দেশীয় পণ্যের প্রদর্শনী করলে তা পণ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটাবে।

কুমিল্লার খাদি এখন শৈল্পিকতার ছোঁয়ায় দেশ-বিদেশে সমাদৃত হয়ে আসছে। খাদির কাপড় যাচ্ছে আমেরিকা,ইংল্যান্ড,মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। এ সুনাম অর্জিত হয়েছে বহু বছর ধরে অনেক কারিগর আর ব্যবসায়ীর অক্লান্ত পরিশ্রমে। এ সকল শিল্পীর প্রতি রইলো শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।।

পোশাক বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ

জামদানি শাড়ীর যত্ন-

বাঙ্গালি নারী এবং শাড়ী সেই আবহমান কাল থেকেই অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। প্রিয় এক একটা শাড়ীর সাথে জড়িয়ে থাকে অনেক মধুর স্মৃতি। তাই প্রতিটি শাড়ীই আমাদের কাছে মহা মূল্যবান। তবে শাড়ি অনেক প্রিয় হলেও এগুলো নিয়মিত পরা সম্ভব হয়ে ওঠে না কর্মব্যস্ত জীবনে। নিয়মিত পরা হয়ে ওঠেনা বলেই শাড়ী গুলোর জায়গা হয় আলমারি বা ওয়ারড্রবে। কিন্তু যেন তেনভাবে রেখে দিলেও আরেক বিপদ, ক’দিন পরই দেখা যায় শখের প্রিয় শাড়ী গুলো সব ভাঁজে ভাঁজে ফেঁসে গিয়েছে, নাহয় ফাঙ্গাস পরে একাকার অবস্থা দাঁড়িয়েছে।  তাই শুধু শাড়ী যত্ন করে পরলেই হবে না, খুব যত্ন সহকারে এদের কে তুলে রাখতে হবে আলমারি বা ওয়ারড্রবে। যেমন ধরুন জামদানি শাড়ী’র কথা। আমাদের প্রিয় জামদানি শাড়ী যেমন ঐতিহ্যের দিক দিয়ে সেরা, তেমনি এর যত্নটাও নিতে হয় খুব নিখুঁতভাবে। তা না হলে শুধু ভাঁজ করে রেখে দিলে ক’দিন পর ভাঁজ খুলে নষ্ট হওয়া শাড়ীটি দেখে মুখ ভার করে বসে থাকতে হবে।

জামদানি সাধারনত দুই ধরনের হয়ে থাকে, সুতি ও হাফসিল্ক আর এক ধারণের জামদানি আজকাল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, যেগুলো নাইলন সূতা দিয়ে বানানো হয় এবং সেগুলোর মূল্যও হয় ১ হাজার টাকা বা এর নিচে। এগুলো এম্নিতেই ক’দিন পর ফেঁসে যায়, তাই এই নিম্ন মানের জামদানির যত্ন নিয়ে কিছু বলার প্রয়োজন বোধ করছিনা আমি। আমি আজ বলবো হাফসিল্ক ও সূতি জামদানির যত্ন নিয়ে। আমরা তো জানিই যে জামদানি শাড়ির জমিন এবং ডিজাইন পুরোটা সুতা দিয়ে তাঁতের মাধ্যমে হাতে বোনা হয়ে থাকে। তাই এর দাম তাও অন্য শাড়ীর তুলনায় একটু বেশী। তবে জামদানি শাড়ির দাম নির্ধারণ করা হয় এর ডিজাইন ও সূতার বুননের ওপর।

হাফসিল্কের জামদানি শাড়িগুলোই আসলে অরিজিনাল জামদানি। রেশম সূতা গুলোও ৩ ধরণের হয়ে থাকে। যে শাড়ী গুলো ৩-৫ হাজার টাকার মধ্যে সেগুলোতে এক ধ্রণের রেশম সূতা দেয়া হয়। যেগুলো ৬-৮ হাজারের, সেগুলোতে মধ্যম মানের আর যে গুলো ৯ থেকে শুরু হয়, শে গুলোতে উন্নত মানের রেশম ব্যবহার করা হয়। এগুলোতে রেশম ও কটন সূতা ব্যবহার করা হয় আর মোটিফ অর্থাৎ যে কাজ গুলো করা হয়, সেগুলোও করা হয় উন্নতমানের সূতা দিয়ে। তাই এই শাড়ী গুলোর ব্যাপারে খুব যত্নশীল হতে হয়।

আসুন জেনে নিন কীভাবে জামদানি শাড়ীর যত্ন নিতে হবেঃ

১. জামদানি শাড়ি ব্যবহারের পর ভাঁজ করে অনেক দিন রেখে দিলে তা ভাঁজে ভাঁজে ফেঁসে যেতে পারে। আবার হ্যাঙ্গারে করে ঝুলিয়ে রাখলেও শাড়ি মাঝখানে ফেটে যায়। তাই জামদানি শাড়ি হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে বা ভাঁজ করে না রাখতে নেই। রোল করে রাখতে পারেন কোন শক্ত কাঠের ঊপর, যেভাবে রাখা হয় থান কাপড়। এভাবে রাখলে জামদানি কখনোই নষ্ট হবে না।

২. হাফসিল্ক জামদানি শাড়ি অন্যান্য সাধারণ শাড়ির মতো ঘরে ধুলে নষ্ট হয়ে যাবে নিশ্চিত। তাই ঘরে না ধুয়ে ড্রাইওয়াশ করানো ভালো। এ ছাড়া সবচেয়ে ভালো হয় জামদানি শাড়ি কাটা করালে। এ ক্ষেত্রে যারা জামদানি তৈরি করেন তারাও এ কাজটি করে থাকেন। কাটা করিয়ে নিলে আপনার শখের জামদানি শাড়িটি অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকবে।

৩. কিছুদিন পর পর শাড়ী গুলো খুলে রোদে দিয়ে ভালো করে বাতাসে ঠান্ডা করে আবার যত্ন সহকারেই আলমারিতে রেখে দেবেন। মনে রাখবেন রোদ থেকে এনে সাথে সাথেই তা আলমারিতে ঢুকিয়ে রাখলে আপনার শাড়ীটি আর ভালো থকার সম্ভাবনা নেই।

৪. জামদানি পরার পর যদি কোন দাগ পড়ে যায়, তাহলে তা নিজের হাতে ঘসে ঘসে না উঠিয়ে সেখানে ট্যালকম পাউডার ছিটিয়ে দিন, তারপর ড্রাই ক্লিনিং এ দিন।

৫. জামদানির নিচের পাড়ে অবশ্যই ফলস পাড় লাগিয়ে নেবেন কেনার পর পরই, তাহলে ময়লা বা জূতার ঘসাতে নিচের পাড়টা নষ্ট হবে না, টেকসই থাকবে।

৬.সূতি জামদানি গুলো যদি ১০০% কটন সূতার হয়, তাহলে ধুতে পারেন, কিন্তু যদি হালকা রেশম মিক্সড থাকে, তাহলে ধোওয়া উচিত না। ১০০% কটন কি না তা কীভাবে বুঝবেন? সিম্পল, শাড়ীর আঁচলের শেষ মাথার সুতা গুলো হাত দিয়ে দেখুন। সূতা গুলোতে টাচ করলেই বুঝতে পারবেন ওগুলো রেশম নাকি সব কটন। রেশম সূতা খুব মোলায়েম হয়, আর সূতি সূতা তো ধরলেই বুঝা যাবে। তবে ম্যাক্সিমাম জামদানি গুলোতে রেশম মিক্সড থাকবেই, তা নাহলে জামদানি’র রঙ ও ডিজাইন তেমন সুন্দর হয় না। ১০০% কটন হলে কিছুদিন পর ফেড হয়ে যায়, যা রেশম-মিক্সড জামদানিতে হয় না। তবে প্রব্লেম হলো আজকাল অনেক তাতীরাও ফাঁকি দেয়া শিখে গেছে। রেশম এর সাথে নাইলন মিক্সড করে দেয়, যা সাধারণ মানুষ কিছুতেই ধরতে পারবে না। কেবল এক্সপার্ট্রাই সেগুলো ধরে ফেলতে পারেন।

৭. ২/৩ বার পরার পরই কাটা করিয়ে নেবেন, তাহলে জামদানিটি ভালো থাকে। কাটা করা মানে কেটে ফেলা মনে করবেন না, জামদানি বানানোর সময় তাঁতিরা সুতাতে মাড় ব্যবহার করে। কয়েকবার পরার পর সেই মার গুলো নষ্ট হয়ে যায় বলে শাড়িতা নেতিয়ে পড়ে। কাটা করা মানে হলো সেই জামদানিটিতে মাড় প্রয়োগ করা। এটা করলে একদম নতুনের মতো হয়ে যাবে আপনার প্রিয় শাড়িটি।

জামদানি সম্পর্কে জানতে ও আসল জামদানি চিনতে চাইলে আমাদের সাথে থাকুন। পোশাক বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ